নিউজ ডেস্ক : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপিকে রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আজকে বিএনপি ও তাদের নেতারা ১০ দফা দাবির কথা বলছেন। অথচ তারা রাজনীতির নামে মানুষ পোড়ায়, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে। তাদেরকে রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হবে। এটিই হচ্ছে এই দেশের মানুষের এক দফা দাবি।
শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘বিএনপি-জামাত কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন, নৈরাজ্য, মানুষ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত অগ্নি সন্ত্রাসী ও হুকুমদাতাদের বিচারের দাবিতে’ এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার নির্দেশনায়, ফখরুলদের পরিচালনায় ও অর্থায়নে সেই অগ্নিসন্ত্রাস বাংলাদেশে পরিচালনা করা হয়েছিল। পাঁচ শতাধিক মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ৩ হাজারের বেশি মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। সাড়ে ৩ হাজারের বেশি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তাদের এই আগুন থেকে অবুঝ পশুপাখি এবং গাছপালাও রক্ষা পায়নি। এরা মানুষের শত্রু, পশুপাখির শত্রু, প্রকৃতির শত্রু।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের জন্য ময়দান বরাদ্দ দিয়েছে। এর বাইরে আরো চারটি ময়দানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কোনোটাতেই যাবে না, তারা করবে নয়াপল্টনে। সমাবেশের ডাক দিয়েছে ১০ তারিখে, কিন্তু ৭ তারিখ থেকে রাস্তা দখল করে সমাবেশ করা শুরু করেছে। আর পুলিশ যখন রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানাতে যায়, তখন পুলিশের উপর হামলা চালানো শুরু করে দিয়েছে। এভাবে তারা দেশে বিশৃঙ্খলা করেছে এবং এখনও করছে।’
মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘মানবাধিকার লাঞ্ছিত করার সাথে যারা জড়িত, তাদেরকে মূলোৎপাটন করার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা বিকশিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ মানবাধিকার লংঘন করা এবং মানুষ খুন-হত্যার ধারক-বাহক বিএনপি-জামাত জোটের বিরুদ্ধে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়াব। সেটিই হচ্ছে আমাদের আজকের এই দিনের শপথ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সামাদ বলেন, ‘মানবাধিকার দিবসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার যারা, তাদের আমরা এখানে দেখছি। আমরা তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দেশের মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন, সেগুলো আজ মানবাধিকার দিবসে আমাদের উচ্চারণ করা উচিত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা নির্বাচন চায় না, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায়।’
মানববন্ধনে ২০১৪ সালের আগে দায়িত্ব পালনের সময় রাজশাহীতে আহত হওয়া পুলিশের উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি এসআই ছিলাম। শালবাগানে আমার ডিউটি ছিল। তারা অসংখ্যবার আমার ওপর হামলা করেছিল, লাঠি-ইট-হেলমেট দিয়ে। আল্লাহর রহমতে আমি বেঁচে গেছি। মানুষকে শান্তিতে রাখার জন্য আমরা ডিউটি করেছি। এই জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা আমার ওপর হামলা করেছে। হেলমেট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করেছে। আমি ভারসাম্য রাখতে পারি না এখন। আমার কষ্ট হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি এই সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করি।’
সে সময় নিহত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী পারভীন আক্তার বলেন, ‘২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর তাকে নির্মমভাবে একটি হাত কেটে দেয়। পা ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। অগ্নিসংযোগকারীরা সাধারণ মানুষকে পেট্রোল বোমা দিয়ে আহত করেছে। আমার স্বামী তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পাশে দাঁড়িয়েছিল। এটাই কি আমার স্বামীর অপরাধ ছিল? এই সন্ত্রাসীরা আবার মানবাধিকারের কথা বলে! গণতন্ত্রের কথা বলে!’
সংগঠনটির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ সেই সময়ে আহত ও নিহতদের স্বজনরা বক্তব্য রাখেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: