নিউজ ডেস্ক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের দেশে সত্যিকার রাজনীতিকদেরকে জীবনটা হাতের মুঠোয় নিয়ে চলতে হয়, কখন গ্রেনেড হামলা হয়, কখন গুলি হয়, কখন কী হয় ! পঙ্কজ ভট্টাচার্য তাই করেছেন। একজন রাজনীতিবিদ কেমন হওয়া প্রয়োজন সেটি পঙ্কজ ভট্টাচার্যকে দেখলে জানা যায়।তিনি দেশ ও জাতীর জন্য সদা নিবেদিত প্রাণ । তিনি সেই উদাহরণ হয়ে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য নাগরিক স্মরণসভা জাতীয় কমিটি আয়োজিত স্মরণসভায় একথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের পক্ষে স্মরণসভায় যোগ দেন হাছান মাহমুদ।
বক্তৃতায় তিনি বলেন, রাজনীতি একটি ব্রত। সেটি অনেকে ভুলে গেলেও পঙ্কজ ভট্টাচার্য রাজনীতিকে ব্রত হিসেবেই নিয়েছিলেন। তিনি যা বিশ্বাস করতেন আজীবন সেটির জন্য কাজ করে গেছেন। আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক এই মানুষটি দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুরোধা ছিলেন। অনেক নির্যাতন সয়েছেন।
ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য গত ২৪ এপ্রিল মারা যান। স্মরণসভায় পঙ্কজ ভট্টাচার্যকে স্মরণ করেন ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, সংস্কৃতিজন রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সভাপতি শাহ আলম, বাংলাদেশ জেএসডি সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, বাংলাদেশ শান্তি পরিষদ সভাপতি ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণফোরাম সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট এসএমএ সবুর, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন তিনি অসাম্প্রদায়িক, শোষনমুক্ত প্রগতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন ।বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন থেকে শুরু করে আমৃত্যু মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অগ্রসেনাণী ছিলেন।শাসক ও শোষকশ্রেণীর দমন নীপিড়ন, জেল জুলুম তাকে দমন করতে পারেনি।ক্ষুদ্রজাতি সত্তা ও দলিত মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে তিনি কাজ করে গেছেন। নারীসমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে অগ্রাধীকার দিয়েছেন সমান ভাবে ।
বক্তারা বলেন তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন । পঙ্কজ ভট্টাচার্য মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার প্রতিষ্টার জন্য সর্ব্বোচ্চ আদালতে যতেও দীধা করেনি । সরকারের সকল সড়যন্ত্র ও মিথ্যাকে পদদলিত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন ।মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ, কমিউনিষ্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর গৌরব উজ্জল অংশগ্রহনের স্বীকৃতি ও অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠা করে গেছেন ।
১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। তিনি গত শতকের ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী বাংলাদেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী, একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী ও সংগঠক। ১৯৬৬ সালে তিনি ‘স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র’ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারারুদ্ধ হন।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন । তিনি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরাম প্রতিষ্ঠায় অন্যতম সংগঠক ছিলেন ।২০১৩ সালে তিনি ঐক্য ন্যাপ নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: