• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

সিলেটে হকারমুক্ত নগরী গড়তে ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের মানবেতর জীবন 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৩৬ পিএম
কঠিন হয়ে উঠেছে  ছিন্নমূল হকারদের জীবন সংগ্রাম
ছিন্নমূল হকারদের জীবন

জামান চৌধুরী, সিলেট প্রতিনিধি: ‌সিলেট নগরীর ফুটপাতে ভাসমান কয়েক হাজার  ক্ষুদে ব্যবসায়ী  শাকসব্জি কাপড় ঘড়ি  জুতা মাছ ফলমূল  বাচ্চাদের  খেলনা    ইত্যাদি  ব্যবসা করে জীবন নির্বাহ করে । কারো কারো এই ফুটপাতে ভাসমান ব্যবসার বয়স ৩০ বা  তার অধিক  বছর ধরে এভাবেই চলছে জীবন জীবিকা। কিন্তু গতবছর ২০২০ সাল থেকে একটু কঠিন হয়ে গেল দিন আনে দিন খায় এই পথের মানুষগুলোর । যেপথ এই মানুষগুলোর জীবন নির্বাহের অবলম্বন সেই পথ ক্রমশ  তাদের অচেনা  হতে লাগলো। 

সিলেটের মেয়র আরিফুল হক দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে একটু বেশিই কঠিন হয়ে উঠেছে  ছিন্নমূল হকারদের জীবন সংগ্রাম, বেঁচে থাকার  লড়াই।  ফুটপাতে ব্যবসা করতে গিয়ে পুলিশ থেকে ক্যাডার  চোখ রাঙানী আর দৌঁড়ানী সবই গা সওয়া সন্ধ্যার পর নেতাদের আর  প্রশাসনের  নির্ধারিত ফি  সবই আদায় করেও এক জায়গায় বসে ব্যবসা করার মেলেনা অনুমতি একদিকে পুলিশের দৌঁড়ানী অন্যদিকে সিটি মেয়রের লাঠিয়াল বাহিনী এমন পরিস্থিতে একদিন স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবীতে আন্দোলনে ফুসে উঠে হকাররা এ  নিয়ে দীর্ঘদিন  আন্দোলন  সংগ্রামের পর একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আসে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার। 

সিলেটের পুরান হকার্স মার্কেটের কিছু জায়গায় শ'তিনেক  হকার্সকে পুনর্বাসন করা হলেও সিংহভাগ হকার্স থেকে যায় পুনর্বাসনের বাইরে। যারা পুনর্বাসনের বাইরে ছিল তারা আগের মতো  ফুটপাতে দৌঁড়ের ওপর ব্যবসা করতে থাকলো ফলে ব্যবসায় চরমভাবে মার খেতে থাকলো মূল রাস্তা থেকে অনেক ভেতরে পুনর্বাসিত মাঠের দোকানীরা । যে আনাজপাতি মূল সড়কে ক্রেতারা পেয়ে যায় সেই পণ্যের জন্য এতদূর ভেতরে কেউ আসতে চায়না তাই  

‌পুনর্বাসিত হকারেরা বিক্রি-বাট্টা না থাকায় মূল পূঁজি হারিয়ে ক্ষুদ্রঋণের  জালে আটকে বিপর্যস্ত খেটে-খাওয়া মানুষদের জীবন। ঘুরে দাঁড়াবার পথও বন্ধ সিটি কর্পোরেশন আর পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে ফুটপাতে  দাঁড়াতেই পারছেনা হকারেরা । এমন কি কাধে নিয়ে বেলুন বা  শিশুদের খেলনা বিক্রি করলে ও ধরে নিয়ে  যাচ্ছে  পুলিশ । 

এমতাবস্থায় শত শত হকারের  ঘরে নেই খাবার ছেলে - মেয়ের  লেখা পড়া বন্ধ রয়েছে  কোন কোন পরিবারে দু'বেলা রীতিমতো  খাবার জুটছে। অনেক হকারকে পুলিশ ধরে জেল হাজতে পাটিয়ে দিচ্ছে। ব্যবসার মালামাল সিটি কর্পোরেশন জমা দিচ্ছে স্বয়ং পুলিশ। কোন কোন ঠেলাগাড়ীর মালামাল দুএকদিন পর ফেরত পেলেও সেগুলো পঁচে গলে নষ্ট যায়। অনেক মালামাল ঠিকঠাক পাওয়াও যায়না  
এবিষয়ে কথা হয় হকারস নেতা  শাহজাহান, খোকন, রফিক সহ দশ পনেরো জনের সঙ্গে তারা  মা বাবা ছেলে মেয়েদের নিয়ে দু'বেলা দুমুঠো খেয়ে বাঁচার সুযোগ  দিতে প্রশাসনের প্রতি দাবী জানাচ্ছেন । তারা বলেন আমরা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ এনে পুঁজি খাঁটাই। মালামাল এনে বিক্রি করি সেই মালামাল পুলিশ এসে ফেলে দেয় বা নিয়ে যায় এমতাবস্থায় আমরা মহাবিপর্য়ের মধ্যে পড়েছি। 

প্রতি সপ্তাহে কিস্তি দিতে হয় সেটা এখন পারছিনা একদিকে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশন এবং পুলিশের চাপ। সব মিলিয়ে সিলেটের হকারেরা দ্বিকবিদিক ছুটছেন নেতাদের এবং প্রশাসনের দ্বারেদ্বারে। ফিরে পেতে এই শহরে একটু দাঁড়াবার ঠাঁই।  হকার্স নেতা শাহজাহান জানান সিটি কর্পোরেশন ভাসমান ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন টেকসই না হওয়া এবং পরিকল্পনা মাফিক না হওয়ার কারণে সেখানে বাজারটি জমেনি। 

খোকন, বলেন কথা ছিল তিনমুখী রাস্তা হবে  সেটা হয়নি স্থায়ীভাবে অর্থাৎ একটু মজবুত করে ঘর তৈরী করতে দেওয়া হছেনা। রফিক জানান  গতএক সপ্তাহধরে অসংখ্য হকার দোকান নিয়ে বসতে না পারায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / জামান চৌধুরী

আরো পড়ুন

banner image
banner image