ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeরাজনীতিজাতীয় ঐক্য সমন্বয় পরিষদের ১৯ দফা

জাতীয় ঐক্য সমন্বয় পরিষদের ১৯ দফা

সুমন দত্ত: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্য সমন্বয় পরিষদ ১৯ দফা দাবী বাস্তবায়ন করার জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে। এসব দাবী পূরণ না করে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আপত্তি প্রকাশ করেন । পাশাপাশি দেশে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

সোমবার (১৭ মার্চ ২০২৫ইং)জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম নাজিম উদ্দিন আল আজাদ। সভাপতিত্ব করেন শেখ  মোস্তাফিজুর রহমান।

জাতীয় ঐক্য সমন্বয় পরিষদের ১৯ দফা দাবি

১. জুলাই-আগস্ট ২০২৪ গণহত্যাসহ সকল গুম, নির্যাতন, শাপলা চত্বরে খুন ও বিডিআর হত্যা এবং ভোটাধিকার হরণের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদেরও বিচার করতে হবে এবং রাজনীতি করা থেকে বিরতসহ তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

২. সকল প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পূর্ণ করেই জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। যেন তেন সংস্কার নয়। গণ অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধরে রাখাসহ বাস্তবায়ন করতে হবে।

৩. জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হবে। স্থানীয় সরকার বলতে হবে স্থানীয় প্রশাসন নয়, নীতি প্রণয়ন করতে হবে যাতে দেশ ও জনগণের কল্যাণ সাধিত হয় ।

৪. অত:পর গণপরিষদ নির্বাচন করে গণপরিষদ সদস্যদের ভোটে সংবিধানসহ পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করে গণ পরিষদ সদস্যদের ভোটে নতুন সংবিধান পাস করে তার আলোকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে অথবা সংবিধান সংশোধন হবে গণভোটের মাধ্যমে। যেন আর কোন ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার সৃষ্টি হতে না পারে এবং নির্বাচন কমিশনের উপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হয় । যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা যায় সেই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। ৫. সরকার শুধুমাত্র কক্যৈটি দলের সাথেই সংলাপ করে সংলাপ হয়ে গেছে বলে চালিয়ে যাচ্ছে যা প্রস্কৃতপক্ষে কোনো সংলপ হচ্ছে না বলে আমরা মনে করি । সরকারের নিকট আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো দেশের ছোট বড় পরিচিত অপরিচিত সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সামাজিক সংগঠন, নাগরিক সংগঠন ও নাগরিকদের সাথে সংলাপ করেই সকল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের জানা মতে, দেশে ১৫০-১৬০ টির মতো রাজনৈতিক দল রয়েছে।২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশনকে ৯৩টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। অন্যথায় এ সংলাপও সিদ্ধান্তসমূহ অর্থবহ হবে না ।

আমাদের জানা মতে দেশে ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর ছাড়া প্রায় ৯৩টির মতো রাজনৈতিক দল রয়েছে। যাদের নিবন্ধন নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে ।

৬. অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ব্যবসায় সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে জনমনে স্বস্তি আনতে হবে। মূদ্রাস্ফীতি কমাতে হবে। ব্যাংকিং খাত শক্তিশালী করতে হবে। অর্থনৈতিক মুক্তি ও কর্মস্থান সৃষ্টি করতে হবে। নাগরিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারলেই প্রকৃত গণতন্ত্রের পথে যাওয়া সহজ হবে। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। অর্থনৈতিক সচল করাসহ সকল ধরনের চাঁদাবজি বন্ধ করতে হবে।

৭. সরকারের উপদেষ্টাদের আরো তৎপর ও শক্তিশালী হতে হবে।

৮. সরকারের দেশ চালাতে যদি সমস্যা মনে করেন বা তাদের নিকট যদি ভার

মনে হয় তাহলে আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো প্রয়োজনে পূর্ণাঙ্গ ক্যাবিনেট করে জাতীয় সরকার বা বিকল্প সরকার গঠন করতে হবে। যাতে করে শক্তিশালীভাবে দেশ পরিচালিত হয় এবং ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করতে হবে। আমরা চাই এই সরকার যাতে ব্যর্থ না হয়ে সফলতা অর্জন করে। এ বিষয়ে গণভোট (Referendum) জনগণের মতামত নেওয়া যেতে পারে।

৯. দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে কূটনৈতিক মিশনে ফ্যাসিস্টদের দোসরদের প্রত্যাহার করে দেশ প্রেমিক যোগ্যদের নিয়োগ দিতে হবে। বিশেষত: ভারতে বসে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভারতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে ।

১০. প্রশাসনের সকল স্তরে ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের প্রত্যাহার করে বা বরখাস্ত করে দেশপ্রেমিক যোগ্যদের নিয়োগ অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে । ১১. সংসদ সদস্যদের সংখ্যা ৫০০ তে উন্নীত করতে হবে। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থায় উচ্চকক্ষে ২০০ জন সদস্য (সিনেটর) করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাবগুলো সংসদ সদস্যদের খরচ কমাতে হবে।

১২. শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। যাতে থাকবে আলেম ওলামাসহ জ্ঞানী ব্যক্তিগন। ফ্যাসিস্টদের শিক্ষা ব্যবস্থা বাতিল করে দেশ ও জাতীর কল্যাণে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষাসহ বিশ্ব মানের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রনয়ন করতে হবে। জুলাই গনঅভ্যুথানকে আমরা ধারন করি, সম্মান করি এই চেতনা অব্যাহত থাকুক।

১৩. আন্দোলনে সকল শহীদদের ক্ষতিপুরন দিতে হবে। দ্রুত তাদের ক্ষতিপুরনের ব্যবস্থা করতে হবে। সকল আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা। তাদের জন্য কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সারা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় সাফল্য ফিরিয়ে আনতে হবে। ১৪. আমরা বাংলাদেশ কে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করতে চাই। যা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারে। অর্থনৈতিক মুক্ত ও অর্থনৈতিক বৈষম্য নূন্যতম পর্যয়ে থাকে। রাজনীতি নয় রাজনীতি নয় জননীতিতে কাজ করতে হবে। সাম্য, ন্যায় বিচার ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে ।

১৫. এছাড়াও আমরা জাতীয় ঐক্য ও গন মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে ও রাজনৈতিক সমাজিক ও পেশাদারকে ঐক্যবদ্দ করে ঐক্যব্ধ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষে জাতীয়ঐক্য সমন্বয় পরিষদ এর আরো পরিসর বৃদ্ধি করা হবে ।

১৬. কৃষক শ্রমিক মেহনতী মানুষের অধিকার সংরক্ষণে সকল প্রকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণ করা হবে ।

১৭. কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থী কোনো আইন পাস কর যাবে না ।

১৮. রাষ্ট্রীয় সকল মৌলিক প্রশ্নে জাতীয় ঐক্যমত্য বাংলাদেশী জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠাকরণ এবং উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গতানুগতিক রাজনৈতিক ধারা পরিবর্তন করা ।

১৯. তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি উৎসের পাশাপাশি পানিসম্পদ থেকে বিদ্যুতের

উৎপাদন ব্যবস্থা করা এছাড়া নিরাপদ পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করে স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করা। জনগণের গোচরীভুক্ত করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সকল চুক্তি সম্পাদন করা ।

 

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular