বিজয় কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত মিঠামইন, ইটনা, নিকলী, অস্টগ্রাম উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তার পাশাপাশি করিমগঞ্জ, হেসেনপুর, পাকুন্দিয়া সহ অন্যান্য উপজেলায়ও ঘন সবুজে বেড়ে উঠেছে বোরো ধানের আবাদ।
কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৭৮ লাখ ৮ হাজার ৯১২ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ইটনায় আবাদ ২৭৪০০ হেক্টর – উৎপাদন ১২৮৫৮৫ মেট্টিকটন, মিঠামইন আবাদ ১৫৬৯০ হেক্টর – উৎপাদন ৮০৫৪৯ মেট্টিকটন, নিকলী আবাদ ১৪৩৮০ হেক্টর – উৎপাদন ৬৮৮৮৪ মেট্টিকটন, অস্টগ্রাম আবাদ ২৪১৭০ হেক্টর – উৎপাদন ১১১১৪৭ মেট্টিকটন।
সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জেলার ৪০ হাজার কৃষককে ২ কেজি করে বোরো হাইব্রিড ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে, যা ফলন বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। জেলায় উচ্চ ফলনশীল ব্রীধান-৮৯, ৯২, ৮৮, ২৯, হাইব্রিড এ্যাসেল এইট এইচ, হীরা-১। রবি ফসলে ১৫ হাজার ২০০ কৃষককে প্রণোদনা আওতায় বীজ এবং ডিএপি ও এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। যদিও কিছু এলাকায় ধানের আগাম শীষ বের হয়েছে তবে কৃষি বিভাগের তৎপরতায় তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
কৃষকরা আশা করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাম্পার ফলন হবে। ইটনা উপজেলার চিলনী গ্রামের কৃষক মো. আইয়ূব আলী বলেন, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ২০০ শতাংশ জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি।
সময়মতো বীজ, সার ও সেচের পানি পেয়েছি। কৃষি অফিস থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করতে আসে। ধানের অবস্থা ভালো আছে, আশা করছি ভালো ফলন হবে। উপজেলার চং নোয়াগাও গ্রামের বরজু মিয়া বলেন, আমি এবার বোরো আবাদ করে ভাল ফলনের আশা করতেছি। মাঝে মাঝে কৃষি অফিস থেকে অফিসার এসে আমাদের ধানের জমি দেখাশোনা করে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে কৃষকরা উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করায় শ্রমিক সংকট তেমন প্রভাব ফেলেনি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে সেচ কাজে কোনো সমস্যা হয়নি।সার ও বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। কিশোরগঞ্জ খামারবাড়ি কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাদিকুর রহমান বলেন, এ বছর আমাদের জেলায় ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে।
এরমধ্যে হাওর উপজেলাগুলোতে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৮ লাখ ৮ হাজার ৯১২ মেট্রিকটন। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তবে জেলায় ভাল ফলনের আশা রয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে আমরা হাওরের পাশাপাশি অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও ধান কর্তন করতে পারব।