নিউজ ডেস্ক: পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানি নামার গতি ধীর হওয়ায় বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর পরিস্থিতির উন্নতি তেমন দৃশ্যমান নয়। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসছে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি। শেরপুর জেলাতেই কৃষি ও মৎস্য খাতে এখন পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। তবে প্রায় সব জেলাতেই কর্মকর্তারা বলছেন, পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় প্রাথমিক হিসাবে কৃষি ও মৎস্য খাতে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে কৃষি খাতে ৫২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং মৎস্য খাতে ৭০ কোটি ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ঢলের পানির তোড়ে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় দুই হাজারের মতো মাটির দালান বিধ্বস্ত এবং তিন হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে গত দুই দিনে শেরপুর সদরের নকলা উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বন্যায় গত পাঁচ দিনে জেলায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শেরপুর খামারবাড়ির উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস জানিয়েছেন, পাঁচ উপজেলায় ৩৮ হাজার ২২৭ হেক্টর আবাদি জমি বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ২২ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ এবং ১৫ হাজার ৩৩৯ হেক্টর জমির ফসল আংশিক নিমজ্জিত হয়, যার মধ্যে রোপা আমনের আবাদি জমি রয়েছে ৩১ হাজার ২৮৬ হেক্টর, শাক-সবজি ৮৬০ হেক্টর এবং বস্তায় আদা চাষ ১১.২৮ হেক্টর।
উৎপাদিত ফসলের মোট ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ ৬১ হাজার ৯০৮ মেট্রিক টন, যা টাকার অঙ্কে ৫২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। আর সর্বমোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা এক লাখ ৭৭ হাজার ৮০৫।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার জানান, পাঁচ উপজেলার ৩১ ইউনিয়নে সৃষ্ট বন্যায় সাত হাজার ৩৬৪টি পুকুর দিঘি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মোট আয়তন এক হাজার ৩০৬ হেক্টর। এতে আট কোটি ৪৮ লাখ টাকার অবকাঠামোগত ক্ষতিসহ মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৭০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।