ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeসর্বশেষলাকসামে গরু মোটাতাজাকরনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

লাকসামে গরু মোটাতাজাকরনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

মশ্উির রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা: কুমিল্লার দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তর লাকসাম উপজেলায় আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে গবাদী পশু মোটাতাজাকরনের নামে অবৈধ বিষ বানিজ্য এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। এতে বাড়ছে এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

উপজেলার কতিপয় গরু খামারী অবৈধ বিষ বানিজ্যে মোটা অংকের টাকার লাভবান হবার টার্গেট নিয়ে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। এছাড়া এলাকার গৃহস্থ, খামারী ও ব্যবসায়ী এবং ছোট বড় খামারীরা গরু মোটা তাজাকরন করতে ব্যবহার করেছেন দেশী-বিদেশী কোম্পানীর হরেক রকম ইনজেকশন, ট্যাবলেট ও পাউডার। ওইসব গবাদীপশু মোটাতাজাকরনে মারাত্মক ক্ষতিকর বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগ যেন লোকজনের রুটিন ওয়ার্কে পরিনত হয়েছে।

ওইসব মোটাতাজাকরন ঔষধ ব্যবহার কিংবা প্রয়োগে বৈজ্ঞানিক ধারনা ও প্রচলিত নিয়মকানুনের সাথে কোন মিল নেই। চলমান গ্রীষ্মের শেষ মূহূর্তে এ অঞ্চলের বেশীর ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা না থাকলেও সবুজ ঘাস পাওয়া যায় না। তার উপর গো-খাদ্যোর মূল্য বৃদ্ধি ও সংকট তীব্রভাবে দেখা দেয়। ক্যাটেল কেয়ার, ইনজ্যাইভিট, এনোরা, সেটরন, ক্যাটাপস, বার্নাফেট, বায়োমিক্স, ভারমিক, কৃমিনাশক ঔষধ ও এডি-৩সহ বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করতে দেখা যায়।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ভারত সীমান্তের প্রায় অর্ধশতাধিক চোরা পথ দিয়ে আসা গরুগুলো বিভিন্ন রোগ বহনকারী জীবানু নিয়ে এলাকার লোকজন মারাত্মক আতংকে আছে। অ্যানথাক্স এমন একটি রোগ এ রোগের জীবানু দীর্ঘদিন পরও আবার নতুন করে বিস্তার ঘটাতে পারে। গরুমোটাতাজাকরনে ষ্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ সাধারনতঃ হাঁফানী রোগে চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। অথচ ডেক্সমেথাসন, ডেকাসন, বেটামেথাসন ও প্যারিয়্যাকটিন জাতীয় ভিটামিন অতিমাত্রা ব্যবহারেই গরু মোটা ও তাজায় পরিনত হয়ে উঠে বলে ওইসব পন্য ব্যবহারে ধুম পড়েছে এলাকার গরু খামারী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে। এদিকে পাবনা ব্রিড, অষ্ট্রেলিয়ান-ফ্রিজিয়ান ব্রিড, ইন্ডিয়ান হরিয়ানা ব্রিড, পাকিস্তানী সাহিয়াল ব্রিড ও হেকটোফিন জাতীয় ব্রেন্ড এবং স্থানীয় ব্রিডিং পদ্ধতি ছাড়াও লোকাল ক্রস ব্রিড নামে গরু বর্তমানে মোটাতাজাকরন প্রক্রিয়ায় বড় করা হচ্ছে। দেশী-বিদেশী ঔষধগুলোর মধ্যে মাইকোডিন, ডেক্সউইন, ডেক্সামিন, স্টেরন, ডি-কট, ডেক্সভেট, হিষ্টানল, সিয়ামভেট, নিরাভেট, ডেক্সকট, ডেকাসন, ওরাডেক্স, ফিডভেট, ফিডেক্সানল-এস, প্রিডনিভেট, প্রেডনিসলন, প্যারিয়াকট্রিন, ভিটাভেটসহ হরেক রকম ষ্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ গবাদীপশু মোটাতাজাকরনে ক্ষেত্রে স্থানীয় ফার্মেসী গুলোতে বিক্রি হতে দেখা যায়।

সুত্রটি আরও জানায়, কোরবানী ঈদে বিভিন্ন হাটবাজারে এ সব গরু স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে বেচাকেনা করে থাকেন বড় বড় গরু ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন গরু বাজার গুলোতে শান্তিপূর্ন ও নিরাপত্তা বিধানে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে যাচ্ছে। যাতে দেশী-বিদেশী গরু ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে এ অঞ্চলের হাট-বাজার গুলোতে গবাদীপশু বেচাকেনা করতে পারে। তবে গরুবাজার ইজারাদারদের দৌরাত্ব নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উপজেলা-পৌরসভা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাদের কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular