নিউজ ডেস্ক : চাকরি ফিরে পাওয়াসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন সশস্ত্র বাহিনী থেকে বিভিন্ন সময়ে চাকরিচ্যুত একদল সাবেক সৈনিক। দিনভর কর্মসূচির পর রোববার সন্ধ্যায় আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তাঁরা।
সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে প্রেসক্লাবের ভেতরে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আসে। আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁদের দাবি শোনা হয়েছে এবং পূরণের বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আপাতত কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার তাঁরা বিবৃতি দিয়ে পরবর্তী করণীয় জানাবেন বলে জানান। আন্দোলনকারীদের ঢাকার বাইরে থেকে আসা সদস্যদের ঢাকায় অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
বৈঠকের পর সেনা কর্মকর্তারা প্রেসক্লাব এলাকা ত্যাগ করলে কিছু ব্যক্তি তাঁদের গাড়িবহরের পেছনে গিয়ে উসকানিমূলক স্লোগান দেন। এরপর সেনাসদস্যরা সড়কের ওপারে অবস্থান নেওয়া ওই ব্যক্তিদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
‘বাংলাদেশ সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্ম’-এর ব্যানারে আন্দোলনকারীরা সকাল সাতটার পর থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। বেলা ১১টার দিকে জাহাঙ্গীর গেটের দিকে যাত্রা শুরুর চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের থামিয়ে দেয়।
বেলা দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান প্রেসক্লাবের সামনে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রথম দফা বৈঠক করেন। দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর তিনি গাড়িবহর নিয়ে প্রেসক্লাব ত্যাগের চেষ্টা করেন। তখন কিছু আন্দোলনকারী তাঁর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে আবারও তিনি গাড়ি থেকে নেমে আন্দোলনকারীদের বোঝান।
পরে সন্ধ্যায় আবারও একটি প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসে। প্রায় সোয়া ঘণ্টা আলোচনার পর আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
আন্দোলনকারী মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, যাঁরা ১০ বছরের কম চাকরি করে চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের পুনর্বহালের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। যাঁদের চাকরির মেয়াদ শেষ, তাঁদের পেনশনের আওতায় আনার চেষ্টা হবে। যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের নতুন করে আবেদন করতে হবে না। যাঁরা করেননি, তাঁদের রাতের মধ্যেই আবেদন করতে বলা হয়েছে।
একটি দাবির মধ্যে ছিল গতকাল গ্রেপ্তার হওয়া সমন্বয়ক নাঈমুল ইসলামসহ তিনজনের মুক্তি। কামরুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। যেহেতু আজ সন্ধ্যা ছয়টা পার হয়ে গেছে, তাই আগামীকাল তাঁদের মুক্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তা না হলে আবার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, “একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও একজন কর্নেল আলোচনায় এসেছেন, তাঁদের প্রতি সম্মান জানিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করছি। তাঁরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।”
এর আগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান বলেন, “দাবিগুলো শুনেছি ও নোট করেছি। আবেদন করার নিয়ম বুঝিয়ে দিয়েছি। প্রতিটি কেস আলাদাভাবে মেরিট অনুযায়ী বিবেচনা করা হবে। সেনাবাহিনীর আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখেই আমরা মানবিকভাবে সাহায্যের চেষ্টা করব।”