ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeসারাদেশকিশোরগঞ্জঅষ্টগ্রামে ৩ লক্ষ লোকের জন্য ১ জন চিকিৎসক

অষ্টগ্রামে ৩ লক্ষ লোকের জন্য ১ জন চিকিৎসক

বিজয় কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:- প্রায় তিন লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত অঞ্চল কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম। এই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার একমাত্র আশ্রয়স্থল অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাওরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছর পরেও ৩১ শয্যার জনবল নিয়েই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এ হাসপাতাল।

ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় উপজেলার সাধারণ মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সামান্য অজুহাতে রোগীদের রেফার করাই তাদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ২৫০ শয্যার কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল, সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ভৈরবের বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে। এতে রোগীরা হচ্ছেন নানা বিড়ম্বনার শিকার।

বিপাকে পড়েছেন হাওরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও অসহায় মানুষ। দীর্ঘদিন ব্যবহৃত না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাফ মেশিন ও অপারেশন থিয়েটারের মূল্যবান যন্ত্রপাতি। জানা যায়, এ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে জনবল সংকট। ২৮ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কাগজপত্রে পাঁচজন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও সংযুক্তিতে দুইজন ঢাকায় ও দুইজন কিশোরগঞ্জে কাজ করছেন। এখানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র একজন। এ ছাড়া সহ-স্বাস্থ্য পরিদর্শক ২টি, সিনিয়র স্টাফ নার্স ২টি, স্বাস্থ্য সহকারী ৭টি, অফিস সহকাম কম্পিউটার অপারেটর ২টি, ওয়ার্ড বয় ২টি, পরিচ্ছন্ন কর্মীর ৪টি এবং স্বাস্থ্য পরিদর্শক সিকিউরিটি গার্ড ও অফিস সহায়কের ১টি করে পদ শূন্য রয়েছে।

এ ছাড়া মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) রেডিওলজি, ফিজিওথেরাপি, বিসিজি, ইপিআই, পিপিআই, উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার কম্পিউটার অপারেটর, স্বাস্থ্য শিক্ষাবিদ, পরিসংখ্যানবিদ, এসিস্ট্যান্ট নার্স, ড্রাইভার, হারবাল এসিস্ট্যান্ট, গার্ডেনার, জুনিয়র মেকানিক, বাবুর্চি, মালি ও অফিস সহকাম এন্ট্রি অপারেটরের সকল পদ শূন্য রয়েছে। রবিবার সরজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, যে স্বাস্থ্য ও পরিবার প. প. কর্মকর্তা জরুরি মিটিং নিয়ে ব্যস্ত। একজন ডাক্তার শত শত রোগীকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওয়ার্ড ও ওয়াশরুম ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। মশা-মাছির জ্বালায় তারা অতিষ্ট।

ডাক্তারও ঠিকমতো আসেন না। একটি দালাল চক্র সাধারণ রোগীদের এখান থেকে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করেন। জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শাহ মো. মহিবুল্লাহ এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি এখানে আসার পর দেখছি ডাক্তার নেই, রয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকট। আমি একা কোন দিক সামাল দেবো, বুঝে উঠতে পারছি না। শিগগিরই এর সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলশাদ জাহান জানান, বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করবো।

 

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular