নিউজ ডেস্ক: শীত আসন্ন। গাইবান্ধা জেলাজুড়ে চলছে শীতকালীন শাক-সবজির চাষ। ক্ষেতে ক্ষেতে নতুন ফসল লাগানো ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত কৃষক। শীতকালীন আগাম সবজি চাষে বাড়তি পরিচর্যায় ব্যয় বেশি হলেও বাজার দর ভালো পাওয়া যায়।
আশ্বিনের সকালের হালকা কুয়াশা মনে করিয়ে দেয় শীতের আগমনী বার্তা। এরই মধ্যে জেলার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর, সাঘাটা, ফুলছড়িসহ সাতটি উপজেলায় শুরু হয়েছে শীতকালীন সবজি চাষ। শীতের শুরুতেই আগাম ফসল উৎপাদনে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। অনুকূল আবহাওয়া আর সেই সঙ্গে উৎপাদিত সবজির বাজার দর ভালো পেলে শীতকালীন ফসল আবাদে লাভবান হবেন চাষিরা। বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শিম গাছ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, মুলা, পালং ও লালশাকসহ হরেক রকমের সবজির চারা।
মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষকরা। কাকডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন তারা। জমিতে নেমে পড়ছেন সবজি পরিচর্যায়। বিকাল পর্যন্ত মাঠে থেকে চারার গোড়ায় পানি ঢেলে সবাই বাড়ি ফিরছেন। তাদের কেউ দাঁড়িয়ে কোদাল চালাচ্ছেন, অনেকেই গাছের গোড়ালির পাশ দিয়ে ঘোরাচ্ছেন নিড়ানি। কেউবা খালি হাতেই গাছগুলো ঠিক করছেন। কেউ আবার নেতিয়ে পড়া চারার স্থলে সতেজ চারা প্রতিস্থাপন করছেন। এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ। ধান চাষে তেমন একটা সুবিধা করতে না পেরে আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন চাষিরা।
সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাটের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সবজি চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না।রোগবালাই দমনে সবজিতে কীটনাশক বেশি প্রয়োগ করতে হয়। স্বল্প সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রায় প্রতিদিনই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়। পরিবারের চাহিদাও মেটানো সম্ভব হয়। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালো। সব মিলিয়ে সবজি চাষকেই এসব কৃষক লাভজনক মনে করছেন।
ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া গ্রামের সবজি চাষি মোকারম হোসেন লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, ঢেঁরশ, মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া, বরবটি আবাদে এখন ভীষণ ব্যস্ত। উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও আগাম শীতকালীন সবজির বাজার দর ভালো পাওয়ায় এ আবাদে লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে যেসব উৎপাদিত শীতকালীন সবজি বাজারে আসছে তার ভালো দাম পাওয়ায় খুশি তিনি।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদিত সবজি জেলার সবজি চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত সবজি ঢাকাসহ অন্য জেলাতে সরবরাহ করা হবে।উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের মুনাফাও বেড়েছে কয়েক গুণ।