তারিক মোহাম্মদ, ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের ঝিকরগাছায় একটি তুচ্ছ ঘটনায় আসামীরা ফজিলা বেগম (৪৫) ওরফে ফেলিকে প্রথমে মাথার চুল কাটে তারপর মুখে কালি মাখিয়ে বাড়ির পিলারের সাথে বেঁধে বাঁশের লাঠি দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক মারপিট পৈশাচিক নির্যাতন চালান রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
এঘটনায় ওইদিন রাতেই ঝিকরগাছা থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগি ফেলি। এই মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামী করা হয়। রাতেই পুলিশ এজহার নামীয় ৪জন আসামীকে আটক করে।
পরদিন সোমবার আদালতে আসামীদেরকে প্রেরণ করলে ওইদিনই জামিনে মুক্তি পান। আসামীরা বাইরে বেরিয়ে ফজিলা বেগমকে মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি দেখায়।
নিরাপত্তা হীনতায় থাকা ফজিলা বেগম ঝিকরগাছা থানায় ২ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক সাধারণ ডায়েরি করেছেন। যার জিডি নং-১৫৬, তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি।
ঝিকরগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাপাতলা গ্রামের মো. আঃ খালেকের ছেলে মো. শিমুল হোসেন (৪৮) এবং একই গ্রামের মৃত গোলাম মোড়লের ছেলে মো. আব্দুল কাদের (৫০) এর নাম উল্লেখ করে জিডিতে ফজিলা বেগম জানান, গত ২ ফেব্রæয়ারি তার উপর অমানবিক বর্বরচিত নির্যাতনের ঘটনায় বিবাদী দ্বয়ের আত্মীয় স্বজনের নামে একটা মামলা দায়ের করি। ঝিকরগাছা থানায় মামলা নং ০২, তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি।
উল্লেখ্য গত রবিবার ২ ফেব্রুয়ারি ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি কলাবাগান পাড়ায় মধ্যবয়সী নারী ফজিলা বেগমকে চুল কেটে, মুখে কালি মাখিয়ে গায়ে থাকা ওড়না দিয়ে পিলারের সাথে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এসময় উপস্থিত আরও অনেক মহিলা ও পুরুষ চুল কাটার দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে উল্লাস করতে থাকে। যে খবর সারাদেশে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
ঝিকরগাছা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অনিতা মল্লিক বলেন, ঘটনা জানার পরপরই আমরা ভুক্তভোগী মহিলার সাথে কথা বলেছি। তার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে লিখিত বিবরণ পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছি।
ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাবলুর রহমান খান বলেন, ফজিলা বেগমের জিডি গ্রহণ এবং তার নিরাপত্তা জোরদার করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।