নিউজ ডেস্ক: নারী অধিকার সুরক্ষায় রাজনৈতিক ও আইনি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এই দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা করা গেলে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হবে।
গতকাল বুধবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সভাকক্ষে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এই সভার আয়োজন করে কমিশনের নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটি।
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, নারী অধিকার সংরক্ষণে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও আইনি কাঠামোকে শক্তিশালী করা জরুরি। শুধু দিবস উদযাপনের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর প্রভাব ফেলতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করতে হবে সমাজের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে।
সভায় বিশেষভাবে দলিত নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিপীড়নের প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করা হয়। কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, নারী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় সমাজের সব মহলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। নারী শ্রমিকদের সুরক্ষা ও ঝুঁকিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সব মহলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় আরও আলোচনা হয়, আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস (২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর) উদযাপন এবং এর কর্মপরিকল্পনা নিয়ে। বক্তারা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গবেষণা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দেন এবং নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্যের অবসানে কার্যকর সুপারিশ প্রদান করেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জন্য ইতোমধ্যে একটি খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সভায় বক্তারা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এর দ্রুত বাস্তবায়নের প্রত্যাশা করেন।
এছাড়াও, সভায় উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি, অক্সফাম, ইউনিসেফ, বিএনডাব্লিউএলএ, ব্র্যাক, নারীপক্ষ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, পথফাইণ্ডার ইন্টারন্যাশনাল এবং ইয়ুথনেট গ্লোবালসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।
তিনি আরও বলেন, ইয়ুথনেট গ্লোবালের ইকো-মেন উদ্যোগের লক্ষ্য পুরুষ ও ছেলেদের পরিবেশগত স্থায়িত্ব এবং জেন্ডার সমতা অর্জনের জন্য সহযোগী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা, যা দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে কমিশনের সদস্য ড. তানিয়া হক বলেন, “নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতাকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করতে আমাদের নীতি পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিকতারও পরিবর্তন করতে হবে। এই প্রচেষ্টায় পুরুষ ও ছেলেদের সম্পৃক্ত করা দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তনের জন্য অপরিহার্য।” ড. হক লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার অবসানে টেকসই সমাধানের বিকাশে অব্যাহত গবেষণা ও এডভোকেসির গুরুত্বের ওপর জোর দেন। সূত্র প্রেস বিজ্ঞপ্তি