নিউজ ডেস্ক : তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে বিএনপির কথার টোন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) তিনি এই মন্তব্য করেন।
নাহিদ বলেন, রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে উপদেষ্টারা সরকার থেকে বের হয়ে যাবেন । সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত স্ট্যাটাস দিয়েছে যে, এটা অবৈধ ও অনির্বাচিত সরকার, একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে, এর আন্ডারে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব না। সো একই টোনে আমরা যখন কথা বলতে দেখছি, এটা কিন্তু একটা সন্দেহের তৈরি করে। আমি মনে করি না যে এটা তারা (বিএনপি) ওই উদ্দেশ্য থেকে বলেছে, কিন্তু তাদের কথার টোনটা কিন্তু আওয়ামী লীগের সেই টোনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি ও অংশীজনদের সমর্থনেই সরকার গঠন হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে দেয়া বক্তব্য নিয়ে ‘সন্দেহ’ প্রকাশ করেন নাহিদ ইসলাম।
এক-এগারোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এক-এগারো এবং মাইনাস টু-এর আলাপটা কিন্তু সর্বপ্রথম বিএনপিই রাজনীতির মাঠে এনেছে কিছুদিন আগে।’
তিনি বলেন, ‘বিচার কার্যক্রম, সংস্কার, ও নির্বাচন এসবগুলোই বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার হলেও বিএনপি কেন জানি মনে করে এই সরকারটা হয়েছে কেবল একটি নির্বাচন দেয়ার জন্য। অন্তর্বর্তী সরকারকে তো আমরা নিরপেক্ষই মনে করছি। বিএনপি কেন মনে করছে না, এটা স্পষ্ট করা উচিত।’
নির্বাচনের সময় এগিয়ে এলে এসব বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা সম্ভব বা কোনও অভিযোগ থাকলে নিরপেক্ষতার স্বার্থে কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে সেটা তখন সরকার বিবেচনায় নিতে পারবে বলেও জানান তথ্য উপদেষ্টা।
চলতি বছরের শেষ থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়সীমা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকাল এবং নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়সীমা দেয়া হয়েছে, সে পর্যন্ত ধৈর্য রেখে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সামনে এগোনো প্রয়োজন বলে মনে করেন নাহিদ ইসলাম।
গত বুধবার (২৩ জানুয়ারি) বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ থাকতে না পারলে নির্বাচন করতে নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে। শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক দল গঠন করলে সরকার থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানায়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরপেক্ষ সরকারের দাবিকে আরেকটা এক-এগারো সরকার গঠনের ইঙ্গিত হিসেবে ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
সরকারের দুই তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর প্রতিক্রিয়ার পরও পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।