ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeরাজনীতিরাজনীতিতে নতুন ইসলামিক শক্তি ‘জামায়াত-চরমোনাই জোট’

রাজনীতিতে নতুন ইসলামিক শক্তি ‘জামায়াত-চরমোনাই জোট’

নিউজ ডেস্ক : দেশের রাজনীতিতে ইসলামপন্থী দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থাকলেও নতুন পরিস্থিতিতে দূরত্ব ঘোচার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। পরে তিনি চরমোনাই পীরের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। এ নিয়ে রাজনীতিসহ জনমনে ব্যাপক কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, ইসলামী দলগুলোর ঐক্য তাহলে চূড়ান্ত হওয়ার পথে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এত দ্রুত সম্ভব নয়।

গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে বরিশালে চরমোনাই পীরের দরবারে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনের বৈঠক নিয়ে দুঃচিন্তার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও লিয়াঁজো কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের যারাই রাজনীতি করবেন, তাদের যার সঙ্গে মতের মিল হবে এক সাথে কাজ করার জন্য চিন্তা করতে পারে, সিদ্ধান্ত নিতে পারে- এটা নিয়ে কারও কোনো দুঃচিন্তা থাকার কারণ নাই। এক সময় একদল আরেক দলের বিরোধিতা করেছে, সমালোচনা করেছে; আবার আন্দোলনের এক পর্যায় গিয়ে তারা একমত হয়েছে। এটাতে অবাক হওয়ার কী আছে?

তিনি আরও বলেন, আজকে যারা একমত, কালকে তারা একমত নাও থাকতে পারে। এটাও ঘটেছে বাংলাদেশে বহু। তাতেই বা অবাক হওয়ার কী থাকতে পারে? কাজেই এই বিষয়গুলো নিয়ে দুঃচিন্তাগ্রস্ত বা এটা নিয়ে মন্তব্য করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তারা তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাস থেকে যা উচিত মনে করবেন, তারা তা নিশ্চয় তা করবেন।

ইসলামী দলগুলোর ঐক্য বা জোট হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দুদলের আমির ঐক্যের জন্য জনসাধারণের কাছে দোয়া চান। তারা বলেন, ইসলামী দলগুলো ভোটকেন্দ্রে একটি বাক্স পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বৈঠকে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা মূলত ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দেখতে চাই। আমাদের মিলনমেলা আল্লাহর জন্য। এই মিলন রাজনীতির মাঠেও থাকবে। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। জনগণের প্রত্যাশা, নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইসলামী দলগুলোর যেন একটি বাক্স থাকে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, নির্বাচনের সময় ইসলামের পক্ষে একটি বাক্স কেন্দ্রে পাঠানোর প্রচেষ্টা আগেও ছিল, এখনো চলছে। বিভিন্ন কৌশলে গত ৫৩ বছর ইসলামী দলগুলোকে দূরে রাখা হয়েছে। ৫ আগস্ট নতুন স্বাধীনতার মাধ্যমে ইসলামী পক্ষের জন্য একটি ভালো ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। তবে আমরা যদি সময়োপযোগী বিচার না করি, তা আমাদের জন্য অকল্যাণকর হতে পারে।

দুই দলের শীর্ষ নেতার সাক্ষাৎ ঐক্যের সূচনা কি না জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, কেউ তো বলেনি যে, ওই বৈঠক ঐক্যের সূচনা। আমরা সব দেশপ্রেমিক দল ও ইসলামী শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে চব্বিশের আন্দোলনের চেতনা সমুন্নত থাকবে। আমরা বহুকাল এদেশে রাজনীতি করছি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই যোগাযোগ রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় চরমোনাই পীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। এটি নতুন নয়।

আগামী নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের বনিবনা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ- এমনটা বিবেচনায় নিয়ে জামায়াতের নীতিনির্ধারকরা অন্যান্য ইসলামী দলের সঙ্গে একটি নির্বাচনী ঐক্য গড়তে চাইছেন। এ লক্ষ্যে দলটি যোগাযোগ বাড়িয়েছে। তবে নির্বাচনী ঐক্য গড়ার বিষয়টি এখনো দৃশ্যমান নয়। চূড়ান্ত রূপ নিতে আরও সময় লাগবে। যদিও চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরাবরই বলেছে যে, জামায়াতের সঙ্গে তাদের আদর্শগত কিছু মতানৈক্য রয়েছে। যে কারণে ঐক্য গড়তে বিলম্ব হচ্ছে। কিন্তু জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ইসলামী দলগুলোর ঐক্য গড়তে কোনো বাধা হবে না। কেননা জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দিয়ে ইসলামী দলগুলোর নির্বাচনী ঐক্য শক্তিশালী হবে না বলে অধিকাংশের মত।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular