ঢাকা  শুক্রবার, ২২শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeঅর্থনীতিঢাবি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মূল বেতন ৩০০% বৃদ্ধির প্রস্তাব

ঢাবি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মূল বেতন ৩০০% বৃদ্ধির প্রস্তাব

নিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পে প্রপোজাল কমিটি মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫-এ জাতীয় বেতন কমিশনের সভাপতির কাছে নতুন পে স্কেলের প্রস্তাবনা হস্তান্তর করেছে। কমিটি জানিয়েছে প্রস্তাবিত কাঠামোয় মূল বেতন গ্রেড অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির দাবি করা হয়েছে এবং মোট ২০টি গ্রেডে নতুন বেতন র‌্যাঞ্জ প্রস্তাব করা হয়েছে।

কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্তমান ৭ম জাতীয় পে স্কেল ২০০৯ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছিল এবং ৮ম পে স্কেল ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর। এরপর বিগত ১০ বছরে নতুন কোনো পে স্কেল ঘোষণা না হওয়ায় সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাস্তবে অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার মূল্যে ধারাবাহিক বৃদ্ধির কারণে বাস্তবচাহিদা পূরণে বেতনের যথাযথ সমন্বয় জরুরি।

প্রস্তাবিত নবম জাতীয় বেতনস্কেলের নমুনা হিসেবে কমিটি বিভিন্ন গ্রেডে বেতনরেঞ্জ প্রকাশ করেছে। উদাহরণস্বরূপ —
১ম গ্রেডে ৮ম জাতীয় বেতনস্কেল অনুযায়ী মূল বেতন ছিল ৭৮,০০০ টাকা (নির্ধারিত), যা প্রস্তাবিত ৯ম জাতীয় বেতনস্কেলে হবে ৯৪,৪০০ টাকা;
২য় গ্রেডে মূল বেতন ছিল ৬৬,০০০–৭৬,৪৯০, নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী হবে ৮০,০০০–৯২,৫৩৭ টাকা;
৩য় গ্রেডে ছিল ৫৬,০০০–৭৪,৪০০, প্রস্তাবিত হয়েছে ৬৭,৭৬০–৮৯,০২৪ টাকা;
৪র্থ গ্রেডে ছিল ৫০,০০০–৭১,২০০, নতুন প্রস্তাব ৬০,৬০০–৮৬,১৫২ টাকা;
৫ম গ্রেডে মূল বেতন ৪৩,০০০–৬৯,৮৫০, প্রস্তাবিত ৫২,০৩০–৮৪,৫৫০ টাকা;
৬ষ্ঠ গ্রেডে ৩৫,৫০০–৬৭,০১০, প্রস্তাবিত ৪২,৯৫৫–৮১,০৮৩ টাকা;
৭ম গ্রেডে ২৯,০০০–৬৩,৪১০, নতুন প্রস্তাবে ৩৫,০৯০–৭৬,৭২৭ টাকা;
৮ম গ্রেডে ২৩,০০০–৫৫,৪৭০, প্রস্তাবিত ২৭,৮৩০–৬৭,১২১ টাকা;
৯ম গ্রেডে ২২,০০০–৫৩,০৬০, প্রস্তাবিত ২৬,৬২০–৬৪,২০৩ টাকা;
১০ম গ্রেডে ১৬,০০০–৩৮,৬৪০, নতুন প্রস্তাব ১৯,৩৬০–৪৬,৭৫৪ টাকা;
১১তম গ্রেডে ১২,০০০–৩০,২৩০, প্রস্তাবিত ১৪,৫২০–৩৬,৫৮০ টাকা;
১২তম গ্রেডে ১১,০০০–২৬,৫৯০, নতুন প্রস্তাব ১৩,৩১০–৩২,১৭৪ টাকা;
১৩তম গ্রেডে ১১,০০০–২৬,৫৯০, প্রস্তাবিত ১৩,৩১০–৩২,১৭৪ টাকা;
১৪তম গ্রেডে ১০,২০০–২৪,৬৮০, নতুন প্রস্তাব ১২,৩৪২–২৯,৮৬৬ টাকা;
১৫তম গ্রেডে ৯,৮০০–২৩,৪৯০, প্রস্তাবিত ১১,৮৫৮–২৮,৪২২ টাকা;
১৬তম গ্রেডে ৯,৩০০–২২,৪৯০, নতুন প্রস্তাব ১১,৩৩৩–২৭,২১৩ টাকা;
১৭তম গ্রেডে ৯,০০০–২১,৮০০, প্রস্তাবিত ১০,৮৯০–২৬,৩৭৮ টাকা;
১৮তম গ্রেডে ৮,০০০–২০,০১০, নতুন প্রস্তাব ৯,৬৮০–২৪,২১২ টাকা;
১৯তম গ্রেডে ৮,০০০–১৬,৮৫০, প্রস্তাবিত ৯,৬৮০–২০,৩৪৮ টাকা;
২০তম গ্রেডে ৮,২৫০–২০,০১০, প্রস্তাবিত ৯,৯৮৩–২৪,২১২ টাকা;
কমিটি বলেছে প্রতিটি গ্রেডে নির্ধারিত রেঞ্জে কিভাবে ক্রমান্বয়ে বেতন বৃদ্ধি হবে তার বিশদ বিবরণও দেওয়া হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নতুন পে স্কেল বাস্তবায়নের জন্য যে অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন হবে তা সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। তিনি জানান, ডিসেম্বরে বাজেট সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং পে কমিশনের গেজেট প্রকাশের পর বাস্তবায়ন নির্ভর করবে; তবে আশা করা যায় আগামী বছরের শুরু (২০২৬ সালের শুরু) থেকেই নতুন পে স্কেল কার্যকর হতে পারে।

সূত্র জানায়, জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছিল ২৭ জুলাই ২০২৫-এ এবং কমিশন চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

এতে করে সম্ভাব্য নতুন পে স্কেল ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কার্যকর হলে সরকারি কর্মচারীদের আয় ও জীবনমানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটতে পারে—কমিটির ভাষ্য অনুযায়ী এটি সরকারি সেবা ধরে রাখার পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থার স্থিতিশীলতাও বাড়াবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে বাজেটীয় প্রভাব ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা যাচাইয়ে বিস্তারিত মূল্যায়ন প্রয়োজন হবে। তবে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব সরকারের কাছে উপস্থাপন করা ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ঢাকানিউজ২৪/মহফ

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular