নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মশাল মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তর রংপুর সমিতির উদ্যোগে আয়োজন করা হয়।
কার্যক্রমটি বিকেল ৭টায় আব্দুল জব্বারের মোড় থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কে.আর. মার্কেট প্রাঙ্গণে সমাবেশে মিলিত হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয় সমর্থকরা অংশ নেন এবং ‘তিস্তাপাড়ের হিস্যা চাই’, ‘তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাই’—রকম নানা স্লোগান দেন।
বক্তাগণ জানান, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের কৃষক ও সাধারণ মানুষ পানির ন্যায্য অংশ থেকে বঞ্চিত হয়ে ভুগছেন।
বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, “আমরা যারা উত্তরবঙ্গের মানুষ, আমাদের জীবন ও জীবিকা তিস্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত… অন্যায়ভাবে তিস্তার পানি সরিয়ে নেওয়ায় আমাদের কৃষি ও জীবন বিপন্ন হচ্ছে।”
একইভাবে ছাত্রনেতা ও শাখা-শিবিরের সেক্রেটারি আবদুল্লাহ আল মঈন তিস্তা প্রকল্প বিবেচনায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তোলেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এক প্রতিনিধির বক্তব্যে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাস্তবায়নের ঘোষণা দিলেও নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে এবং সেটি শুরু হয়নি, এজন্য তাদের উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। বক্তারা জানান, তিস্তা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের জীবনমান আরও খারাপ হবে।
এই কর্মসূচি স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রীক হলেও দেশের অন্যান্য তিস্তা-বেষ্টিত এলাকাও একই দাবিতে গত কয়েক দিনে মশাল প্রজ্জ্বলন ও মানববন্ধন করেছে—রংপুর, লালমনিরহাটসহ বহু স্থানে একই ধরনের বিক্ষোভ নথিভূত হয়েছে। আন্দোলনকারীরা সরকারের কাছে চায়—চূড়ান্ত সময়সীমা স্পষ্ট করে প্রকল্পের কাজ অবিলম্বে শুরু করা হোক।
এই প্রেক্ষাপটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের পানির সুব্যবস্থা, সেচ ও বন্যানিয়ন্ত্রণসহ বহুমুখী উন্নয়ন লক্ষ্য করে প্রস্তাবিত একটি বড় প্রকল্প। গত মাসগুলোতে উত্তরাঞ্চলে তিস্তা রক্ষায় জনসচেতনতা ও আন্দোলন জোরালো হয়েছে, ফলে স্থানীয়ভাবে বহু শিক্ষা ও সামাজিক সংগঠন এই দাবিতে কর্মসূচি নিচ্ছে।
মিছিল ও মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত প্রকল্প কার্যকর না হলে ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ কর্মসূচি গড়ে তোলা হবে—এমনই বার্তা দেন আন্দোলনকারীরা। প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও এই ধরনের আন্দোলন উত্তরাঞ্চলের মানুষের বিতৃষ্ণা প্রকাশ করছে বলে অনেকে মনে করছেন।
ঢাকানিউজ২৪/মহফ




