ঢাকা  সোমবার, ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeলিডশসা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

শসা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জমি থেকে শসা চুরিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এতে নারীসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, সোমবার রাতে সুহেলের জমি থেকে জালাল মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া শসা চুরি করে বলে অভিযোগ উঠে। চুরির সময় হৃদয়কে হাতেনাতে আটক করে বলে দাবি সুহেলের। পরে চুরির বিষয় হৃদয়ের পরিবারকে অবহিত করে সুহেলের পরিবার। এরপর হৃদয়ের পক্ষের লোকজন সুহেলের লোকদের কাছে হাত ধরে ক্ষমা চয়। কিন্তু এই ‘হাত ধরে ক্ষমা’ চাওয়াকে অবমাননা হিসেবে দেখেন হৃদয়ের পক্ষের মাতব্বর মীর্জা আলী। তিনি বিষয়টি ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন।

উভয়পক্ষের লোকজন সোমবার রাতেই গোষ্ঠীর মাতব্বরদের নিয়ে কয়েক দফা মিটিং করে মঙ্গলবার ভোরে সংঘর্ষে জড়ানোর। এরপর মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন মুখোমুখি হয়। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নারী ও শিশুসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। তাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সুহেল মিয়ার পক্ষের আহতরা হলো- জুয়েল মিয়া, সুহেল মিয়া, লুদন মিয়া, জসিম মিয়া, কাউছার মিয়া, আরমান মিয়া, সালমান মিয়া, সালাম মিয়া, তুহিন বেগম, জুনাইদ মিয়া, ফকির চান বেগম, ফারুক মিয়া, সবুজ মিয়া, মুন্না মিয়া, ইমরান হোসাইন, সফর আলী, জিহাদ মিয়া, পিন্টু মিয়া, জাফর মিয়া, সুলেমান মিয়া ও সজিব মিয়া।

অন্যদিকে হৃদয় মিয়ার পক্ষের আহতরা হলেন- তোতা মিয়া, সরাজ মিয়া, জালাল মিয়া, ফুলজাহান বেগম, রাব্বি মিয়া, সাদেক মিয়া, সেলিম মিয়া, রজব আলী, কাউছার মিয়া, আলম মিয়া, আমীর আলী, ডালিম মিয়া, সেলিম মিয়া, রজব আলী, কাউছার আলী, আলম আলী, আমির আলী, ডালিম মিয়া, শামীমা আক্তার, ইনন মিয়া, ছফিল উদ্দিন, উত্তম মিয়া, আক্তার মিয়া, আজাদ মিয়া, নুরল হক, এনামুল হক, এনাব আলী, দুলাল মিয়া, জিলু মিয়া, সোরাব আলী, উজ্জ্বল মিয়া, মুরসালিন সরকার, রাজ্জাক সরকার, সুমন সরকার, হাফিজ মিয়া, এমরান আলী, নাবিন আলী, ফজু মিয়া, আকিক মিয়া, সাহেদ মিয়া ও নজরুল হক সরকার। আহতদের একাংশকে হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হৃদয় মিয়ার পক্ষের মীর্জা আলী ও তার ছেলে রাকিবুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা শসা চুরির অভিযোগ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে। আত্মরক্ষা করতে গিয়ে আমরা অন্তত ৪০ জন আহত হই।

অন্যদিকে, সুহেল মিয়ার ছেলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাতে হৃদয় আমাদের জমি থেকে শসা চুরি করে। তাকে ধরার পর বিষয়টি তার পরিবারকে জানানো হয়। কিন্তু উল্টো তারা আমাদের লোকজনদের ওপর হামলা করে।

নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, শসা চুরিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে আহতের সংখ্যা ২০ জন বলে জানতে পেরেছি।

এ প্রতিবেদন লেখার সময় বেলা ১১টা পর্যন্ত এলাকায় পুলিশের টহল অব্যাহত ছিল। দুই পক্ষের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় শ্রীঘর গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular