ঢাকা  শনিবার, ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeজাতীয়সচিবালয় কর্মচারীদের আজ ১ ঘণ্টার কর্মবিরতি

সচিবালয় কর্মচারীদের আজ ১ ঘণ্টার কর্মবিরতি

সচিবালয়ের কর্মচারীরা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। দাবি আদায় না হলে আগামী রোববার নতুন কর্মসূচি দেবেন তারা। তবে জাপান সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা আগামী শনিবার দেশে ফিরলে কর্মচারীদের দাবির কথা তাঁর কাছে তুলে ধরবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এদিকে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো সারাদেশে কলমবিরতি পালন করেছেন।

গত মঙ্গলবার পাঁচ সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর আশ্বাস পেয়ে বুধবারের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছিলেন কর্মচারীরা। পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকজন সচিব গতকাল মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে গিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে হওয়া বৈঠকের বিষয়াদি তুলে ধরেন। এর পর আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা গতকাল সচিবালয়ে কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ঐক্য ফোরাম নেতা বাদীউল কবির বলেন, সব কিছু মাথায় রেখে আগামী দিনে আন্দোলন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জরুরি সেবার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। মাঠ পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সব দপ্তরে একই সময়ে কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মুহা. নূরুল ইসলাম বলেন, শনিবার প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর যদি ভালো কোনো ফল
পাওয়া না যায়, তাহলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আগামী রোববার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আন্দোলন থেকে সরে আসার সুযোগ নেই। সংবাদ সম্মেলনে এই অধ্যাদেশের কারণে কর্মচারীদের ওপর কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, সেসব বিষয় তুলে ধরেন ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব মো. নজরুল ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে কর্মচারীদের দাবি তুলে ধরবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব কর্মচারীদের দাবি মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদকে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবরা। এখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তুলে ধরবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে কর্মচারীদের দাবিসহ গত মঙ্গলবারের আলোচনার বিষয়টি জানিয়েছি। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তাই তিনি বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরবেন।

গত ২২ মে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে গত শনিবার থেকে টানা চার দিন সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। নিজেদের দপ্তর ছেড়ে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। তাদের আপত্তির মধ্যেই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রোববার রাতে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এতে পুরোনো আইনের সঙ্গে ‘৩৭ক’ নামে আরেকটি ধারা সংযোজন করা হয়। নতুন ধারায় দু’দফায় সাত দিন করে নোটিশের পর দায়ী হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

অধ্যাদেশে ‘আচরণ বা দণ্ড সংক্রান্ত’ বিশেষ বিধানে বলা হয়েছে, কেউ যদি এমন কাজ করে, যা অনানুগত্যের শামিল এবং যা অন্য কর্মচারীদের মাঝে অনানুগত্য সৃষ্টি করতে পারে বা শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে বা অন্যের কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে ছুটি ব্যতীত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে। কাউকে কর্মবিরতিতে বাধ্য বা উস্কানি দেওয়া, অন্য কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়া হলে। কোনো কর্মচারীকে তার কর্মস্থলে আসতে বা কাজ করতে বাধা দেওয়া হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে। এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে পদাবনতি বা গ্রেড অবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।

২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাদের কলমবিরতি

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের আহ্বানে সারাদেশে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা গতকাল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কলমবিরতি পালন করেছেন। বৈষম্যমূলকভাবে প্রশাসন ক্যাডারের বাইরের ১২ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার প্রতিবাদ এবং ‘কৃত্য পেশাভিত্তিক’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটা বাতিল ও সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনার দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা গত মঙ্গলবারও কলমবিরতি পালন করেছিল।

আন্দোলনকারীদের সচিবালয়ে নিষিদ্ধ করার আহ্বান

সচিবালয়ের কর্মচারীরা যেভাবে বেআইনি সমাবেশের মাধ্যমে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। তারা বেআইনি কাজের সঙ্গে জড়িতদের কঠোরভাবে দমন করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত ও বদলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল সংগঠনের সদস্য সচিব ডা. শুরশিদ জামিল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular