ঢাকা  সোমবার, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeআইন ও আদালতনারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগে আটক ৪

নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগে আটক ৪

ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : ফজিলা বেগম (৪৫) নামের এক নারীর মাথার চুল কেটে, মুখে কালি মাখিয়ে এবং বাড়ির পিলারে বেঁধে বাঁশের লাঠি দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতীত নারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের মৃত তোরাব মোড়লের মেয়ে। 

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাবলুর রহমান খান বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমাদের পুলিশের একটা টিম অভিযানে চালিয়ে রাতেই ৪ জনকে আটক করে সোমবার সকালে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, গতকাল রোববার বেনেয়ালি গ্রামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত মহিলা বাদি হয়ে ঝিকরগাছা থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ জনকে আটক করেছে।

গ্রামবাসী সুত্রে জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফজিলা বেগমের ছেলে রায়হানের সাথে পার্শ্ববর্তী পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের মেয়ে বিথীর ২বছর পুর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বনিবনা না হওয়ায় তাদের মধ্যে পারিবারিক ভাবে বিচ্ছেদ ঘটে।এরপর বিথীর উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুলের সাথে দ্বিতীয় বিয়ে হয়। রোববার দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে ফজিলা বেগম বেনেয়ালি গ্রামে তার সাবেক পুত্রবধু বিথীকে দেখতে যায়। এটাই তার অপরাধ।

এই অপরাধে বেনেয়ালি কলাবাগান পাড়ার সিরাজুল ওরফে ছ্যারার নেতৃত্বে বিথীর স্বামী শিমুল হোসেন (৩৪), বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম (৪৬), তবিবর এর স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪২), আব্দুল হামিদের স্ত্রী আছিরন বেগম (৪৮), পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলীলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি (৩০), মুকুল বিশ্বাস এর স্ত্রী রহিমা (৪৮) সহ আরও ৫/৬ জন মহিলা মিলে ফজিলা বেগমের মাথার চুল কেটে দিয়ে মুখে কালি লেপন করে দেয় এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে।

এসময় উপস্থিত আরও অনেক মহিলা ও পুরুষ চুল কাটার দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে উল্লাস করতে থাকে। শুধু মারপিট করেই তারা থেমে থাকেনি, দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তাকে শিমুলের বাড়ির পিলারের সাথে বেঁধে রাখে এবং সন্ধ্যার পর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে থানায় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে।
কারও কাছে অভিযোগ না করার হুমকি দিয়ে ফজিলা বেগমকে সন্ধ্যার পরে ছেড়ে দেয়। ছাড়া পেয়ে নির্যাতনের শিকার ফজিলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরই মধ্যে একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ঘটনা জানার পরপরই ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভুপালী সরকার এবং ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো.বাবলুর রহমান খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular