ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeঅপরাধমৌলভীবাজারে ঘাতক পিতার নির্যাতনে ৭ বছরের শিশুর মৃত্যু

মৌলভীবাজারে ঘাতক পিতার নির্যাতনে ৭ বছরের শিশুর মৃত্যু

মো: জহিরুল ইসলাম, স্টাফ মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারে বাবার হাতে খুন হয়েছে মাহিদ (৭) নামে এক শিশু। ঘটনার পর শিশুর বাবা খোকন মিয়া ও দাদী হাওয়া বেগম নিজ ঘরে লাশ রেখে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যার দিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের জগন্নাথপুর গ্রামে এ ঘটনার পর থেকে এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে ।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমান বলেন , এই ঘটনায় সদর উপজেলার জেলগেট এলাকা থেকে খোকন মিয়াকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খোকন মিয়া চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করে আসছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। রোববার বিকালে খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয়া শিশু মাহিদ বিছানায় মল ত্যাগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের বাহিরে এনে ব্যাপকভাকে পিটাতে থাকে ঘাতক পিতা খোকন। এক পর্যায়ে শিশু মাহিদ সেখান থেকে পালিয়ে প্রতিবেশি যবেদা খাতুন এর ঘরে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে ফের ধরে এনে উপর থেকে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয় । এর পর শিশু মাহিদের দুই পা ধরে কংক্রিটের পিলারে সাথে আছাড় দিতে থাকলে শিশু মাহিদের নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে শুরু করে। এ সময় প্রতিবেশি যবেদা বেগম শিশুটিকে রক্ষা করতে চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয় । শিশু মাহিদকে উদ্ধার করে তাকে মৌলভীবাজার সদর আধুনিক ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে দ্বায়িত্বরত ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষনা করেন।

এসময় শিশুটির মৃত্যুও কারণ নিয়েও চতুরতার আশ্রয় নেয় ঘাতক পিতা খোকন মিয়া। মৃত্যুর কারণ সেখানে উল্লেখ করে গাছ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বলে। এর পর সেখান থেকে লাশ নিয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অন্য ঘরে লাশ রেখে পালিয়ে যায় ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ উপস্থিত হলেও সেখানে লাশ ও খোকন মিয়াকে পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ পর লাশ নিয়ে খোকন নিজ ঘরে হাজির হয়ে সেখানে লাশ রেখেই পালিয়ে যায় ।

আশপাশে তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ সেখানে ঘাতক পিতা খোকন ও তার মা হাওয়া বেগমের কোন খোঁজ না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার জেলগেট এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

প্রতিবেশি যবেদা বেগম জানান, বাচ্চাটাকে দুই পা ধরে কংক্রিটের পিলারের সাথে মাথা মারতে থাকে। তখন তাঁর নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। মারধর করার সময় তাঁকে উদ্ধারে আমি এগিয়ে গেলে আমাকে অন্তত দশহাত দূরে টেনে নিয়ে যায়। তবে এসময় অন্য কেউ সেখানে ছিলনা বলে জানান ওই নারী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৫ বছর আগে প্রথম স্ত্রী রেখে তানিয়া আক্তার নামে এক নারীকে বিবাহ করে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলেন খোকন। ওই স্ত্রীর সাথে মনমালিন্য হওয়ায় কয়েক বছর আগে স্বামী খোকন মিয়াকে ছেড়ে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও মাহিদ ও রাফিদ নামে ৬ ও ৭ বছর বয়সী দুই শিশুকে রেখে দেন খোকন। এর পর থেকে মা ছাড়া বাবা খোকন মিয়ার কাছেই থাকত দুই শিশু। স্থানীয়রা বলছেন অনেক দিন যাবত তুচ্ছ কারণে তাদের দুই ভাইয়ের প্রতি অমানবিক নির্যাতন চালাতেন মাদকাসক্ত বাবা খোকন মিয়া।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular