ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeঅর্থনীতিলাকসাম জুড়ে ক্যামিকেল মিশ্রিত শুটকিতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে

লাকসাম জুড়ে ক্যামিকেল মিশ্রিত শুটকিতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম কুমিল্লা : কুমিল্লা দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার হাট-বাজার জুড়ে শুটকি দোকানে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জমজমাট পাইকারী-খুচরা বেচাকেনা। এ অঞ্চলে শুটকির বাজারখ্যাত বিভিন্ন এলাকায় নানাহ কারনে শুটকী মাছ আহরন বন্ধ হয়ে কয়েক হাজার শ্রমিক, মাঝি-মাল্লা ও জেলে বেকার হয়ে মানবেতর দিন যাপন করছে। এছাড়া শুটকী মাছে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রনের ফলে ওইসব শুটকী মাছ খেয়ে এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন যেন নিরব দর্শক।

জেলা দক্ষিনাঞ্চলে উপজেলাগুলোর একাধিক সূত্র জানায়, জেলার সব’কটি উপজেলায় বেশকয়েকটি শুটকির আড়তে চলছে হরেক রকম ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত শুটকির বেচাকেনা। এখানে পাইকারী ও খুচরা বিভিন্ন দেশী-বিদেশী জাতের শুটকি পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলোর একমাত্র উৎস চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ উপকূলীয় অঞ্চলের নদী, খাল, বিল ও হাট বাজার। প্রতিনিয়ত চট্টগ্রাম, খুলনা ও ফরিদপুর থেকে আসা নানা ধরনের শুটকি এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মিটানো হচ্ছে। স্থানীয় তৃণমূল গোষ্ঠীর আত্মসংস্থানের লক্ষে কিছু কিছু পরিবার নদী-নালা, খাল-বিলের মাছ ধরে শুকিয়ে শুটকি বানিয়ে পরিবারের চাহিদা মেটায় এবং অনেকে স্থানীয় বাজারে শুটকির দোকানে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। দেশীয় শুটকির চাইতে আমদানী করা শুটকির দাম অনেক বেশী।

সুত্রগুলো আরও জানায়, এ অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষসি ডাকাতিয়া ছাড়া বড় ধরনের কোন নদী খাল,বিল, হাওর কিংবা শুটকির মোকাম নেই। সকল ব্যবসায়ী জেলার বাহির থেকে শুটকি আমদানী করে থাকেন। আবার পূঁজির অভাবে অনেকেই এখন আর আগের মত শুটকীর আমদানী করতে পারে না। কারন আগে মাছের দাম কম ছিল বর্তমান প্রযুক্তিরযুগে এবং মহামারী করোনার প্রভাবসহ নানান কারণে বর্তমানে মাছের বাজার অনেক চড়া, তবে আসন্ন রমজান মাসে আরো বাড়বে মাছের দাম। এ খাতে জামানত বিহীন কিংবা সহজ শর্তে ঋণের সরকারী নির্দেশনা থাকলেও এ অঞ্চলের ব্যাংক-বীমাসহ অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলো রহস্যজনক কারনে এগিয়ে আসছে না।

জেলার দক্ষিনাঞ্চলের শুটকী ব্যবসায়ীদের একাধিক সূত্র জানায়, জেলার উপজেলাগুলোর প্রধান প্রধান হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুকনো পুটি শুটকি ৩/৪’শ টাকা, সিদল পুটি ৬/৭’শ টাকা, চান্দা ৪’শ, চন্দন ইলিশ ৪’শ, চাঁদপুর ইলিশ ৮’শ টাকা, চট্টগ্রাম-নোয়াখালী ইলিশ ৪/৫’শ টাকা, লইটা ৬/৮’শ টাকা, কাছকি ৩’শ টাকা, ছোট চিংড়ি ৪/৫’শ টাকা, ছুরি ৭/৮’শ টাকা, করাত ১ হাজার ২’শ টাকা, চাপিলা ৪/৫”শ টাকা, বাইঙ্গ ৫/৬’শ টাকা ও পলি ৩/৪’শ টাকাসহ হরেক রকম দেশী-বিদেশী শুটকির দাম নানাহ কারনে উঠানামা করায় ক্রেতারা হিমশিম এবং নানাহ ক্ষেত্রে প্রতারিত হচ্ছে।
সূত্রটি আরও জানায়, শুটকী ব্যবসার ক্ষেত্রে পরিবহন ব্যয়সহ অন্যান্য খাতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় কেনা মালের উপর দাম ঠিক রাখতে এবং পূজির সাথে লাভসহ বিক্রিতে অনেক বেগ পেতে হয় শুটকি ব্যবসায়ীদের। দেশের প্রধান শুটকি বাজার চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, নারায়নগঞ্জ, ব্রাহ্মনবাড়িয়া,আখাউড়া, ভৈরব, কসবা, বরিশাল, খুলনা, যশোহর, ফরিদপুর, সাতক্ষিরা ও পটুৃয়াখালীসহ চরাঞ্চলের অনেক উপজেলার হাট থেকে বিভিন্ন জাতের শুটকি এ অঞ্চলের পাইকারী হাটে আমদানী হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা মৎস্যদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও শুটকী ব্যবসার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কোন তথ্য নেয়া যায়নি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular