গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ভাষা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ আবদুল জব্বারের গ্রামের বাড়িতে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠা হয় ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। এখানে শহীদের ম্যুরাল ছাড়া ব্যবহৃত কোনো স্মৃতি জাদুঘরে নেই। জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় স্থাপিত গণ গ্রন্থাগারটিতে রয়েছে চার হাজারের অধিক বই।
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে রাওনা ইউনিয়নের পাঁচুয়া গ্রামে ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বারের পৈত্রিক ভিটার পাশেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। এখানে রয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার,শহীদ জব্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাঁচুয়ার শহীদ জব্বারের জন্মভিটায় উদযাপন করা হয় অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা।
এদিকে সমৃদ্ধ এই লাইব্রেরিতে খুঁজে পাওয়া যায়না পাঠক। দু:খজনক বিষয় ৪ হাজারেরও বেশী সংগ্রহ নিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা গ্রন্থাগার ও জাদুঘর পাঠকশূণ্য পড়ে থাকে সারা বছর। মাঝে মাঝে উঁকি দিয়ে যায় কিছু দর্শনার্থী। ছুটির দিন বাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই স্মৃতি গ্রন্থাগার ও জাদুঘর। শহীদ জব্বারের জন্মভিটার পাশে ৪০ শতক জায়গার উপর নির্মিত ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।
সারি সারি আলমারিতে শোভা পাচ্ছে ৪ হাজার ১শ ৮৫টি বই। সংগ্রহে রয়েছে দামি ও দুর্লভ বই। পুরো জাদুঘর গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আগে দৈনিক পত্রিকা রাখা হলেও এখন আর দৈনিক পত্রিকা রাখা হয়না। ফলে এলাকার লোকজনও আসেনা। গ্রন্থাগার দেখাশুনা ও পরিচালনার জন্য লাইব্রেরিয়ান, সহকারী লাইব্রেরিয়ান ও পিয়নসহ মোট ৫টি পদ থাকলেও এখানে কর্মরত আছেন একজন সহকারী লাইব্রেরিয়ান ও একজন কেয়ারটেকার। লাইব্রেরিয়ান কায়সারুজ্জামান জানান, অনেক মূল্যবান বইয়ের সমাহার রয়েছে গ্রন্থাগারে।
নিয়মিতভাবেই গ্রন্থাগার খোলা হয়। ভাষার মাসে লোকজন ঘুরতে এলেও বই পড়ার জন্য পাঠক তেমন আসেনা। বুধবার পাঠাগার ঘুরে দেখা গেল বেশ কিছু দর্শনার্থী আসছেন,তারা আশপাশ ঘুরে দেখলেও গ্রন্থাগারের ভেতরে এসে বই পাঠ করতে দেখা যায়না। স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুবর রহমান বলেন,‘ভাষা শহীদ জব্বারের ব্যবহৃত কোনো স্মৃতি এখানে নেই। শহীদ জব্বারের উত্তরসূরীরা এখানে কেউ থাকেনা বলে তাদের কারো সাক্ষাৎ মেলেনা।
অনেকের অভিযোগ পৌর এলাকা থেকে সরাসরি যানবাহন না থাকায় আসা যাওয়া করতে পরিবহন সমস্যা হয়। রাওনা ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত (চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে) উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অফিসার মোফাক্ষারুল ইসলাম বলেন, ’ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর এলকার রাস্তাটি খানাখন্দভরা, এটি সংস্কারের কাজ চলছে। কিভাবে এই সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারটি পাঠকমূখী করা যায় এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’