নিউজ ডেস্ক : জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহ সভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, আমাদের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, আমরা তাই করছি। সংস্কার বা নির্বাচন নিয়ে কমিশনের উপর কোনো চাপ নেই।বিএনপি আগামী দুই একদিনের মধ্যেই তাদের মতামত জানাবে। আর ঈদের পরে এনসিপির সাথে আলোচনা হবে বলেও জানান।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকাল ১০টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংসদ ভবনে অবস্থিত নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বিএনপি আগামী দুই একদিনের মধ্যেই তাদের মতামত জানাবে। আর ঈদের পরে এনসিপির সাথে আলোচনা হবে। আজকে থেকে শুরু হচ্ছে ঐক্যমত্য কমিশনের আলোচনা। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত পাচ্ছি। এগুলো আমরা পর্যালোচনা করছি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের ব্যাপারে কোনো সংশয় নেই। রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করব আমরা।
আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার বা নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের উপর কোনো চাপ নেই। আমাদের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, আমরা তাই করছি।
এর আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাবের লিখিত কপি জমা দেয়া হয়। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাব জমা শেষে রাজনৈতিক কোনো চাপে রয়েছে কিনা কমিশন সাংবাদিকরা কমিশনের কাছে এমন কথা জানতে চাইলে সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনূস। সুতরাং চাপের কোনো প্রশ্ন আসে না বা দেখতে পাই না। রাজনৈতিক দলগুলো বলবে, তাদের দায়িত্ব সুপারিশ তুলে ধরা। সেটার প্রক্রিয়াই চলছে। আমরা তাদের দেয়া সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে সংস্কারের জন্য একটা জায়গায় যেতে চাই। সুতরাং আমরা চাপে নেই।
বিকেল ৩টায় সংসদ ভবনের এলডি হলে প্রথম দল হিসেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সাথে আলোচনায় বসবে কমিশন। পর্যায়ক্রমে অন্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করা করা হবে।
জানা গেছে, বৈঠকে এলডিপির সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন দলের মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, অধ্যক্ষ কে কিউ সাকলায়েন ও অধ্যাপক ওমর ফারুক। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দলের সঙ্গেও আলোচনার সময়সূচি ঘোষণা করা হবে।
সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে কমিশন। প্রথমপর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লিখিত সুপারিশের ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানতে চাওয়া হয়। এরমধ্যে অনেক দল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে তাদের মতামত তুলে ধরে। এখনও মতামত জানায়নি বিএনপি ও এনসিপিসহ ২২টি দল। বিএনপি আগামী সপ্তাহ এবং এনসিপি কয়েক দিন সময় চেয়েছে বলেও জানা গেছে।