ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeআন্তর্জাতিকসিরিয়ায় আসাদ অনুসারী ১৬২ বিদ্রোহীকে হত্যার অভিযোগ

সিরিয়ায় আসাদ অনুসারী ১৬২ বিদ্রোহীকে হত্যার অভিযোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থার মতে, সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী দেশটির উপকূলীয় প্রদেশ লাতাকিয়ায় আলাউইত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠির ১৬২ জনকে ‘হত্যা’ করেছে। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন নারী ও পাঁচজন শিশু রয়েছে। লাতাকিয়া অঞ্চলটি দেশটির আলাউইত সংখ্যালঘুদের প্রাণকেন্দ্র এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি। ব্রিটিশভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ওই অঞ্চলে ‘মাঠ পর্যায়ে মৃত্যুদণ্ড’ কার্যকর করার সময় ১৬২ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। খবর-বিবিসি

বিবিসি জানিয়েছে, তারা এ দাবির সত্যতা যাচাই করে নিশ্চিত হতে পারেনি যে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের নিরাপত্তা বাহিনী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর আগে, বিবিসি দুটি ভিডিও যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে যে, লাতাকিয়ায় একটি গাড়ির পেছনে একজনের মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সিরিয়ান এক কর্মী বিবিসিকে জানান, সহিংসতায় আলাউইত সম্প্রদায় ‘ভয়ঙ্কর অবস্থায় পড়েছে। তিনি বলেন, আমরা খুবই ভীত বোধ করছি। আমরা হতবাক। প্রতিশোধের ভয়ে নাম প্রকাশে রাজি না হওয়া এই কর্মী আরও জানান, তারা জানেন না কী করতে হবে। তাদের সাহায্য করার জন্য, সুরক্ষার জন্য এগিয়ে আসবে এমন কোনো সরকার বা রাষ্ট্র নেই।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র সিরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা সানাকে জানিয়েছে, লাতাকিয়ায় বেশ কয়েকটি সহিংস ঘটনা ঘটেছে। বিদ্রোহীদের সহিংসতা বন্ধ করা হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সিরিয়ায় নতুন সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল আসাদ সরকারের অনুগতদের তুমুল সংঘর্ষ হয়। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় প্রদেশ লাতাকিয়ায় রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত বিমানঘাঁটির কাছে আসাদ অনুগতদের সঙ্গে সিরিয়ান বাহিনী তীব্র এ লড়াইয়ে শতাধিক নিহতের খবর পাওয়া যায়। যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একটি সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সরকারি নিরাপত্তা কর্মী, ২৮ জন আসাদপন্থী যোদ্ধা এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে। সিরিয়াভিত্তিক স্টেপ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সরকার সমর্থিত বাহিনী আসাদপন্থী ‌‘প্রায় ৭০’ জনকে হত্যা করেছে। সেখানকার জাবলেহ ও এর আশেপাশের এলাকায় ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা সিরিয়ার নতুন শাসকরা বলছেন, তারা আসাদের নিজ শহর কারদাহায় সামরিক অভিযান শুরু করবে। সিরিয়ায় সহিংসতা শুরু হওয়ার পর প্রথম বিবৃতিতে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আসাদ সরকারের অবশিষ্ট অনুসারীদের অনুসরণ এবং তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত গেইর পেডারসেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডের খবরে তিনি ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, সকল পক্ষকে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই যা সংঘাত ও ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এতে সিরিয়া আরও অস্থিতিশীল হতে পারে এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক উত্তরণ বিপন্ন হতে পারে।

সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, তারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। একজন আলাউইত নারী বিবিসিকে বলেছেন, অনেক সিরীয় উপকূলে বা রাজধানীতে যেখানেই থাকুক না কেন ‘ভয়’ পাচ্ছেন। বর্তমান উসকানিতে সবাই আতঙ্কিত। তারা ‘বলির পাঁঠা’ হয়ে যেতে পারেন এই ভয় পাচ্ছেন।

তুরস্ক ও রাশিয়া সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আসাদের পতনের পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ এই রক্তপাত পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। সংঘর্ষের পর জার্মানি সিরিয়াকে ‘সহিংসতা’ এড়াতে আহ্বান জানিয়েছে। শিয়া ইসলামের একটি শাখা আলাউইতরা সিরিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ যার সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular