ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeসারাদেশঢাকাহাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে সারজিসের স্ট্যাটাস

হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে সারজিসের স্ট্যাটাস

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে দুপক্ষকে থামাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে মাঠে নামলেও দেখা যায়নি সমন্বয়ক সারজিস আলমকে।

তবে তারঁ মাঠে উপস্থিতি না থাকলেও হাসনাত আব্দুল্লার সাহসের প্রশংসা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সমন্বয়ক সারজিস আলম।

সোমবার স্ট্যাটাসে সারজিস লেখেন, আশপাশে এমন বহুত শত্রু আছে যারা সুযোগ পেলে খুন করে ফেলবে, এইটা জানার পরেও মবের মধ্যে ঢুকে মারামারি থামানোর কথা বলতে হেডম লাগে। অন্য কেউ এই সাহস করে নাই। সাহস করেছে হাসনাত আব্দুল্লাহ। সাহসটা করার জন্যে হাসনাতকে মাথায় তুলে ফেলতে হবে সেটা বলছি না, তবে ন্যূনতম এপ্রিশিয়েটটা অন্তত করতে শিখেন। হয়তো ফলাফল প্রত্যাশিত হয়নি কিন্তু এর চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারত। সবচেয়ে বড় কথা- উদ্দেশ্য সৎ ছিল।

এই ছেলেটার সমস্যা হলো এর মাথা গরম আর সবসময় গ্রেটার পার্পেপেক্টিভ চিন্তা করে। কিন্তু সত্যি এটাই যে, মাথা গরম বলেই সেই জুলাইয়ে ভিসি চত্বরে গায়েবানা জানাজা শেষে যখন সবাই পুলিশের টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড আর ছোররা বুলেটে দিগ্বিদিক ছুটে যাচ্ছিল তখন এই ছেলেটা সর্বপ্রথম স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ওই পুলিশের দিকে দুই হাত প্রশস্ত করে এগিয়ে যায় আর বলে উই আর ওপের টু কিল্ড!

ঠিক যেমনিভাবে গতকাল গিয়েছিল। এই ছেলেটাই সেই জুলাইয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে রাজাকার রাজাকার মিছিলের মাঝখানে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যখন অনেকেই নিজেকে সেফ জোনে রেখেছিল। এই ছেলেটাই সর্বপ্রথম এবং একা সচিবালয়ে আনসার লীগের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে এবং পরবর্তীতে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় সচিবালয় অনেকটা সুরক্ষিত হয়ে উঠে।

এই মাথা গরম ক্ষ্যাপা ছেলেটার দোষ হচ্ছে যখনই কোথাও অস্থিতিশীল অবস্থা দেখা দেয়, ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যায় তখনই এ কোনো কিছু চিন্তা না করে সমাধানের জন্য ছুটে যায়। হোক সেটা ক্যাম্পাস, রাজপথ কিংবা অন্য কোথাও। আপনারা যারা শুধু ঘরে বসে স্যোশাল মিডিয়ার ঝড় তুলতে পারেন তাদের মতো সেইফ গেম প্লে না করতে পারাটা হাসনাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিন্তু তিক্ত সত্য এটাই, এই মাথা গরম স্বভাবওয়ালা ক্ষ্যাপা তরুণ প্রজন্মের কারনেই এই নতুন বাংলাদেশ।

কতজনের এখন কতরকম স্বার্থ আর ধান্ধা সেটা আমরা বুঝি, অপ্রত্যাশিত কিছু হলে এরা যে আবার গর্তে যাবে সেটাও জানি। কিন্তু দিনশেষে চোখের সামনে রক্ত আর হাজারো জীবনের বিনিময়ে অর্জিত নতুন স্বাধীনতা রক্ষা করতে হাসনাতরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আপনাদের মতো গুটিকয়েক ভন্ড, সুবিধাবাজ, কালপ্রিট কী বললো আর কী বিহেভ করল তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। হাসিনার পোষারা এর চেয়ে কম বলেনি বা করেনি। মিনিমাম কমনসেন্স থাকলে বোঝা উচিত কারা করসে, কেন করসে। রকেট সাইন্স না বোঝাটা।

সবশেষে তিনি লিখেছেন, উই আর হাসনাত এন্ড প্রাউড টু বি এ ফেলো-ফাইটার আফ হাসনাত।

প্রসঙ্গত,  রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নীলক্ষেত এলাকায় আসেন হাসনাত। এ সময় তিনি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা তার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তবে হাসনাত উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে নিজেই তোপের মুখে পড়েন।

ঘটনাস্থলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাসনাতকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া’ এবং এসেছে রে এসেছে, ফুটেজখোর এসেছে বলে স্লোগান দেন। পরে তিনি সংঘর্ষ এলাকা ছেড়ে ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান।

এদিন রাত ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের সামনে থেকে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে পৌঁছান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা হলের সামনে অবস্থান নেন।

পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া দিলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নীলক্ষেত এলাকায় চলে আসেন । এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল ও দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।

পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সহায়তায় চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular