নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বাণিজ্য উত্তেজনা কমাতে একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সম্পাদিত এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশ কিছু শুল্ক ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার বিষয়ে সম্মত হয়। ফলে চীন বিরল খনিজ ও চুম্বকের ওপর আরোপিত নতুন নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করবে, আর যুক্তরাষ্ট্রও চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত কিছু শুল্ক কমিয়ে আনবে।
চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ফেন্টানাইল রাসায়নিকের সঙ্গে যুক্ত চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক অর্ধেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। এতে সামগ্রিকভাবে চীনা আমদানির ওপর মার্কিন শুল্কহার ৫৭ শতাংশ থেকে কমে প্রায় ৪৭ শতাংশে নেমে আসবে। অন্যদিকে, চীন তার নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ এক বছরের জন্য স্থগিত রাখবে, যা উচ্চ প্রযুক্তি শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন বাণিজ্য বিভাগও চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে কালো তালিকাভুক্ত চীনা কোম্পানিগুলোর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো মার্কিন প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম ক্রয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা স্বস্তি পাবে।
চুক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো কৃষিপণ্য বাণিজ্যে সহযোগিতা। চীন চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১২ মিলিয়ন মেট্রিক টন সয়াবিন ক্রয় করবে এবং আগামী তিন বছরে সেই পরিমাণ বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত করবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন মার্কিন সয়াবিন কেনা বন্ধ করে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ওপর নির্ভর করছিল, যা মার্কিন কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল।
এছাড়া, মার্কিন প্রশাসন চীনা মালিকানাধীন জাহাজের জন্য নতুন বন্দর ফি বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে শিপিং ব্যয় না বাড়ে এবং বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক থাকে।
ফেন্টানাইল পাচার নিয়ন্ত্রণেও দুই দেশ সহযোগিতায় সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীন কানাডা ও মেক্সিকো হয়ে আসা অবৈধ ফেন্টানাইল প্রবাহ কমাতে কাজ করবে। যদিও অতীতে এ বিষয়ে চীনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ ছিল, এবার তারা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি দুই পরাশক্তির মধ্যে প্রায় এক বছরের জন্য একটি অস্থায়ী “বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি” হিসেবে কাজ করবে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনবে। সূত্র: মডার্ন ডিপ্লোমেসি
ঢাকানিউজ২৪/মহফ



