নিউজ ডেস্ক : ভারত বাংলাদেশের জনগণ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অরাজক, লুটেরা ও গণধিকৃত বাকশালী শাসনের পক্ষে সহযোগিতা করছে বলেছেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সরকারকে প্রকাশ্যে নিপীড়ক-হন্তারক-মাফিয়া মদদ ও সমর্থন দিচ্ছে। এখন একটি ভারতীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ, যা স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বার্থ ও মর্যাদার পরিপন্থী।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বুধবার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনে ভারতের ভূমিকার বিষয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন বা শক্তিতে নয়, ভারতের শক্তি ও সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে আছে। আর এই টিকে থাকার জন্য যত দমন-পীড়ন, গুম, খুন, হত্যা, মামলা-হামলা করা যায় তার সব কিছু করছে ভারতের মদদে।
রিজভী আরও বলেন, ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদের অকপট স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে জাতিসংঘ সনদের ২ (৪) ধারা সরাসরি লঙ্ঘন করে ভারত আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার সব কিছুর উপর সরাসরি নগ্ন হস্তক্ষেপ করে চলেছে। ২ (৪) ধারায় বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল সদস্য রাষ্ট্র আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোনো রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ, ভীতি প্রদর্শন থেকে এবং জাতিসংঘের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন কোনো উপায় গ্রহণ করা থেকে নিবৃত্ত থাকবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের কথায় স্পষ্ট যে, ভারত এ নীতি লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিভিন্ন মানুষ বলে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান, বিডিআর প্রধান, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের প্রধান কে হবেন সেটি নিয়ে নাকি ভারতের সুপারিশ থাকে। ভারত যদি কারও বিরুদ্ধে আপত্তি দেয়, তাহলে তিনি নিয়োগ পান না। গত নির্বাচনে জনগণ দেখেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে একদলীয় নির্বাচনের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। ভারতীয় কূটনৈতিকরা বাংলাদেশে এসে বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তারা স্থিতিশীলতা চান। তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার চান না। ভারত মনোনীত প্রার্থীরা বীরদর্পে বলছেন, ‘আমাকে ভারত মনোনয়ন দিয়েছে। আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ তাহলে বাংলাদেশ কি পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ? তলে তলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কি বিকিয়ে দেওয়া হয়েছে?
বিএনপি এ নেতা আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঢেউ দেখা গেছে তাতে মনে হয় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী এ বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। সুতরাং জনগণের দল হিসেবে বিএনপিসহ ৬৩টি গণতন্ত্রকামী দল এবং দেশপ্রেমিক জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জনের এ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছে।
রিজভী বলেন, দলমত নির্বিশেষে ভারতীয় এ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। আওয়ামী লীগ নয়, ১৮ কোটি মানুষের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের ভূমিকায় ফিরে আসবে ভারত সরকার।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: