বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশাল ৪ আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. শাম্মী আহমেদ মনোনয়নের বৈধতা পেতে অষ্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন।
তার দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় ৪ডিসেম্বর মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম। মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পরে ড. শাম্মী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার-নাগরিকত্ব সারেন্ডার করে নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করেন।
মেহেন্দিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, অস্ট্রেলিয়ান ইলেকটোরাল কাউন্সিলের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ২৯ নভেম্বর যেদিন শাম্মী আহম্মেদ মেহেন্দিগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা দেন তখনও তিনি অস্ট্রেলিয়ার ভোটার। যাহা প্রার্থী হিসেবে সংবিধানের ৬৬ ধারা এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের পরিপন্থি।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে হলে আগ্রহী প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া ছাড়াও বয়স ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। এ ছাড়া অপ্রকৃতিস্থ, দেউলিয়া কিংবা দ্বৈত নাগরিকত্ব এক্ষেত্রে প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে।
৬৬ ধারায় আরও উল্লেখ আছে, কোনো ব্যক্তি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে ও পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করলে; কিংবা অন্য ক্ষেত্রে, পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তিনি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন বলিয়া গণ্য হবে না।
বিধি অনুযায়ী, মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে শাম্মী আহমেদের অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব সারেন্ডার করার কথা থাকলেও সেটি তিনি করেননি।
জেলা নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় বরিশাল ৪ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করেন বরিশালের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম।
এরপরই শাম্মী আহমেদ নিজের অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব সারেন্ডারের জন্য আবেদন করেন। অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশের দূতাবাস সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ ডিসেম্বর শাম্মি আহমেদ এর নাগরিকত্ব বাতিল করেন।
নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে সারেন্ডার করার কথা। তিনি সেটা না করে তথ্য গোপন করে মনোনয়ন জমা দেন। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইতে যখন শাম্মি আহমেদের দুই দেশের নাগরিকত্ব থাকায় মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। তখন তিনি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব সারেন্ডারের জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনের কপি দিয়েই নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন ড.শাম্মী।
আপিলসূত্রে জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর শাম্মি আহমেদের অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব সারেন্ডার করেছে। কিন্তু সংবিধানের ৬৬ ধারা এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে অনুযায়ী শাম্মী আহম্মেদ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব সারেন্ডার করার কথা।
এ বিষয় ড. শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন মেনে সবকিছু করেছি। সংবিধান পরিপন্থি কোনো কাজ করিনি। নির্বাচন কমিশন চাইলে বিষয়টি জানতে পারবে। এটা গোপনীয় ও কঠিন কোনো বিষয় না।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: