• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ঘুষ নেওয়া উপ-করকমিশনারের জামিন নামঞ্জুর


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০৬ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০:১৯ এএম
উপ-করকমিশনারকে আটক করে দুর্নীতি দমন
উপ-করকমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া

নিউজ ডেস্ক: রাজশাহীতে চিকিৎসকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার উপ-করকমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (৫ এপ্রিল) সকালে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক মো. আল আসাদ আশিকুজ্জামান এ আদেশ দেন।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাতে নগরীর রাজপাড়া থানায় দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে দুর্নীতি বিরোধী আইনে মামলাটি করেন। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী কর ভবনে ৫ ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ উপ-করকমিশনারকে আটক করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজশাহীর একটি দল। দুদক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, তারা মহিবুল ইসলামের দপ্তরে অভিযান চালানোর সময় কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাদের ওপর হামলা চালায় কর ভবনের কর্মচারীরা। পরে পুলিশের সহায়তায় উপ-করকমিশনারকে দুদকের কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

জানা যায়, নগরীর মাদারল্যান্ড ইনফার্টিলিটি সেন্টার ও হাসপাতালের মালিক ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার ৫ বছরের ব্যাংক লেনদেনের বিষয়ে উপ-করকমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া আপত্তি তোলেন। নিষ্পত্তির জন্য উপ-করকমিশনার তার কাছে ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।  তার অভিযোগ আমলে নিয়ে দুদকের রাজশাহী জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ে যৌথভাবে কাজ করছিল। দুদকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফাতেমা সিদ্দিকা ঘুষের প্রথম কিস্তির ১০ লাখ টাকা নিয়ে ৪ এপ্রিল উপ-করকমিশনারের কার্যালয়ে যান। এরপরই দুদকের পক্ষ থেকে ওই কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় দুদকের কর্মকর্তারা উপ-করকমিশনারের ড্রয়ার থেকে টাকাগুলো উদ্ধার করেন।

সূত্র মতে, সম্প্রতি রাজশাহীর শতাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কর ফাইল রি-ওপেন করা হয়। তাদের প্রকৃত আয়ের সঙ্গে দাখিলকৃত প্রতিবেদনের বড় অসঙ্গতি শনাক্ত হয়। বিশেষ করে চিকিৎসকদের ব্যাংক হিসাবের প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা নিয়ে কাজ করছিলেন কর কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যে বেশকিছু চিকিৎসককে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এসব নিয়ে রাজশাহীর বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী চিকিৎসকের সঙ্গে কর ভবনের টানাপোড়েন চলছে। এরমধ্যেই ৪ এপ্রিল কর উপ-কমিশনারকে অভিযানে ১০ লাখ টাকাসহ আটক করা হয়।

দুদকের আইনজীবী শহিদুল হক খোকন বলেন, মহিবুল ইসলামের আইনজীবীরা তার জামিন আবেদন করেন। আমরা মহিবুলের জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, মহিবুল ইসলামের জামিন আবেদন করেছিলাম। কারণ তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। উচ্চ আদালতে পুনরায় জামিনের আবেদন করব।

এদিকে উপ-করকমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া আদালতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। তখন ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা অফিসে ঢুকে টাকাগুলো ড্রয়ারে রাখেন। এরপরই দুদকের লোকজন ধস্তাধস্তি করে আমাকে বাইরে থেকে অফিস কক্ষে ঢুকিয়ে দরজা আটকে মারধর করে।

ডা. ফাতেমা সিদ্দিকাকে ফোন করা হলে সাদেকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘তিনি ইমারজেন্সিতে। পরে কথা বলবেন। কিন্তু পরে আর কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক কামরুল আহসান বলেন, অভিযোগ ছিল ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার কাছে মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। সর্বশেষ ৫০ লাখ টাকায় রফাদফা হয়। সেই টাকার প্রথম কিস্তি দিতে গিলে হাতেনাতে আটক করা হয়।

রাজশাহী কর অঞ্চলের কমিশনার শাহ্ আলী বলেন, অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওয়ার্কশপ চলছিলো। এসময় তারা জানতে পারেন, অফিস রুমে ঢুকে ভেতর থেকে ছিটকানি দিয়ে সাদা পোশাকের কয়েকজন লোক মহিবুল ইসলামকে মারধর করছে। তার চিৎকার শুনে অফিসের কর্মচারীরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তি হয়।

তিনি আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ তা বলতে পারবো না। তবে জানতে পেরেছি ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার সম্পদের ২৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির একটি ফাইল ছিলো মহিবুল ইসলামের কাছে। সেটি নিয়ে কাজ করছিলেন।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image