নিউজ ডেস্ক: বিশ্ব বাজারে তেলের জন্য হাহাকার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে চড়া দামে জ্বালানি তেল কিনতে হচ্ছে বিশ্ববাসীকে। এমন অবস্থায় দেশের তেলের বাজারে কিছুটা হলেও সুসময় আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এর কারণ ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন। এই পাইপলাইন দিয়ে ভারত থেকে সরাসরি পরিশোধিত তেল (ডিজেল) আসবে দিনাজপুরের পাবর্তীপুর ডিপোতে। এতে পূরণ হবে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মানুষের তেলের চাহিদা।
বিশেষ করে আমদানিজাত তেল পাবর্তীপুর ডিপোতে পৌঁছাতে যেখানে প্রায় এক মাস সময় লাগে, সেখানে মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে ভারত থেকে এই ডিপোতে তেল আসতে। সেখান থেকে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হবে এ তেল। এতে কমে যাবে পরিবহন ব্যয়। মোট ১৩১.৫ কিলোমিটার পাইপলাইনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে গেছে ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইনের। এখন চলছে নদীর ওপরের কাজ। যা এ মাসেই শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সব ঠিক থাকলে এর বছরেই পার্বতীপুর ডিপোতে এসে পৌঁছবে ভারতের তেল।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই পাইপলাইনটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। পরে ২০২০ সালের মার্চে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ভারতের লুমানিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) এবং বাংলাদেশের মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। তবে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ আড়াই লাখ টনের মতো ডিজেল আমদানি করবে।
পরের বছরগুলোতে তা ৪ থেকে ৫ লাখ টন পর্যন্ত বাড়বে। চুক্তির অধীনে সরবরাহ শুরু হওয়ার দিন থেকে ১৫ বছরের জন্য ভারত থেকে ডিজেল কিনবে বাংলাদেশ। বর্তমানে লুমানিগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে পশ্চিমবঙ্গ রেলওয়ের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজার ২০০ টন ডিজেল আমদানি করে বিপিসি। ২০১৭ সাল থেকে ট্রেনে করে আসছে এ তেল।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) বলছে, বর্তমানে জ্বালানি তেল আনার ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেলে (১৫৯ লিটার) গড়ে ১০ ডলার প্রিমিয়াম (জাহাজভাড়াসহ অন্য খরচ) দিতে হয় বিপিসিকে। তবে ভারত থেকে আনার ক্ষেত্রে এটি আট ডলার হতে পারে। প্রতি ব্যারেলে দুই ডলার কমলে প্রতি এক লাখ টনে প্রায় ১৫ লাখ ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব। তাই ভারত থেকে আমদানি হলে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: