• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০২ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

তিন পার্বত্য জেলায় চিকিৎসা দিচ্ছে সেনাবাহিনী


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:২১ এএম
বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মরতে হতো
চিকিৎসা দিচ্ছে সেনাবাহিনী

নিউজ ডেস্ক;  শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়ন’ এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বিশেষ করে তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম এলাকাগুলোতে চিকিৎসার অভাবে দিনাতিপাত করা মানুষের পাশে সব সময়ই দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। যে কোনো মহামারির সময়ও দুর্গমবাসী সেনাবাহিনীকে কাছে পায়।

তবে দুর্গমবাসীদের কাছে আতঙ্কের নাম হলো চাঁদাবাজ। জেএসএস (মূল), জেএসএস (সংস্কার), ইউপিডিএফ (মূল), ইউপিডিএফ (সংস্কার) এই চার সংগঠনের সন্ত্রাসীরা নিয়মিত তাদের কাছ থেকে চাঁদা তোলেন। চাঁদা না দিলে তাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। গভীর রাতে এসে বাড়িতে হানা দিয়ে চালায় নির্যাতন।

দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী পাহাড়ি-বাঙালিরা বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে পাহাড়ে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। আমরাও এর সুবিধা ভোগ করছি। তবে চাঁদাবাজদের নির্মূল করা গেলে আমরা অনেক শান্তিতে বসবাস করতে পারব। আমরাও এদেশের  নাগরিক। কেন তাদের চাঁদা দিতে হবে?

বর্তমান সরকারের আমলে তিন পার্বত্য জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে এখনো কিছু কিছু এলাকা রয়েছে দুর্গম। এসব এলাকায় বসবাসকারীরা চিকিত্সাসেবাসহ অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত। বর্তমানে শীতের আবহাওয়ায় শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি- জ্বর ছাড়াও নানা রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। তবে সেনাবাহিনী নিয়মিত মেডিক্যাল টিম তাদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। হার্টসহ সব ধরনের রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। মাঝেমধ্যে বিজিবিও দুর্গমবাসীর চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়ি এলাকা এখনো দুর্গম। করোনার সময় হেলিকপটারে করে সেখানকার মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়েছিলেন সেনাবাহিনী।

কাপ্তাই উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন রয়েছে দুর্গম। বিলাইছড়িও দুর্গম এলাকা। বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে কয়েকটি এলাকা রয়েছে দুর্গম। সেনাবাহিনী দুর্গমবাসীদের চিকিৎসাসেবায় সব সময় পাশে রয়েছেন। পাহাড়ি-বাঙালিরা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, জনগণের সব ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পাড়া-মহল্লায় মেডিক্যাল টিম গঠন করে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি খবর থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানতে পারে চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করা গরিচাং চাকমার কথা। সম্প্রতি জুম চাষ করতে যাওয়ার সময় বিষাক্ত সাপ দংশন করে গরিচাং চাকমার বাম পায়ে। সঠিক চিকিৎসার অভাবে তার বাম পায়ের মাংসপেশিতে পচন ধরে। গরিচাং চাকমার এই করুণ অবস্থা দেখে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করেন যাতে তার সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। আর্তমানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিলাইছড়ি জোন। বিলাইছড়ি জোনের মেডিক্যাল টিম সরজমিনে রোগীকে পরীক্ষা করে এবং রোগীর চিকিৎসা শুরু করে। রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল টিম চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ এবং পরবর্তীতে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে রোগীর ডেব্রাইডমেন্ট ও স্কিন গ্রাফটিং সম্পন্ন করে।

বিলাইছড়ি জোনের মেডিক্যাল টিম অস্ত্রোপচারকৃত অংশের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও পরিচর্যার মাধ্যমে দীর্ঘ চার মাস পর গরিচাং চাকমাকে তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়। গরিচাং চাকমা আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পেরে খুবই আনন্দিত। তিনি ও তার পরিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। গরিচাং চাকমার মতো প্রতি মাসে এই ধরনের জটিল রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন সেনাবাহিনী। যাদের দুর্গম এলাকা থেকে গিয়ে কোনো মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাসেবা নেওয়া সম্ভব নয়, তাদের বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মরতে হতো।

চিকিৎসাসেবা ছাড়াও দুর্গম এলাকায় নিম্নবিত্ত, গরিব, অসহায় এবং দুস্থ জনগোষ্ঠীদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণও অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

ঢাকানিউজ২৪.কম / এইচ

আরো পড়ুন

banner image
banner image