ফুলবাড়ী প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : বাংলাদেশ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাক্ষেত্র। এখানে ছয়টি ঋতু বিচিত্র রূপ আর বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবির্ভূত হয়। প্রখর সূর্যকিরণের দাবদাহ নিয়ে আবির্ভূত হলেও গ্রীষ্ম ঋতু দৃষ্টিনন্দন ফুলে ফুলে স্বর্গীয় রুপে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলে। হলুদ সোনালু বা বাঁদরলাঠি ফুল দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে গ্রামীণ জনপদকে।
সোনালী রঙের বাহার থেকেই 'সোনালু' নামে নামকরণ। সোনালু আমাদের দেশের গ্রীষ্মের অতিপরিচিত দৃষ্টিনন্দন পাঁপড়ির থোকাযুক্ত হলুদ রঙের ফুল। সোনালু ঝরণার বৃক্ষ। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর নাম দিয়েছিলেন অমলতাস। শীতে সমস্ত পাতা ঝড়ে গিয়ে গাছ থাকে পত্র শুণ্য।
বসন্তের শেষে ফুল কলি ধরার পূর্বে গাছে নতুন পাতা গজায়। গ্রীষ্মে গাছের শাখা প্রশাখা জুড়ে ঝুলন্ত মঞ্জুরীতে সোনালী হলুদ রংঙের ফুল ফোটে। এর ব্যাপ্তি থাকে গ্রীষ্মকাল পুরো সময় জুড়ে। গ্রীষ্মকালে যখন সবগাছে ফুল ফোটে তখন সোনালী আলোকচ্ছটায় চারপাশ আলোকিত হয়। বনজঙ্গল, বাড়ির আনাচে-কানাচে বা গ্রামীণ বাস্তার ধারে প্রাকৃতিকভাবে জম্মগ্রহন করে এবং অযত্ন অহহেলায় বেড়ে ওঠে সোনালু। গাছের শাখা প্রশাখা কম ও কান্ড সোজাভাবে উপরের দিকে বাড়তে থাকে। বাকল সবুজাভ থেকে ধূসর রঙের হয়ে থাকে এবং কাঠ মাঝারি শক্ত মানের হয়।
গ্রামগঞ্জে এই কাঠ নৌকা তৈরির কাজে ব্যাপক ব্যবহার হয়। সোনালুগাছ সাধারণত ১৫ থেকে ২০ মিটার পযর্ন্ত উঁচু হয়ে থাকে। ফুল থেকে ফল ও বীজ হয়। এই বাঁদরলাঠির ভিতরে অনেক বীজ থাকে ও বীজ থেকে চারা জন্মায়। ফলের আকার দেখতে অনেকটা সজিনা আকৃতির। ফল লম্বায় প্রায় ১ ফুট। রং প্রথমে সবুজ ও পরিপক্ক হলে কালচে খয়েরি রং ধারণ করে। দেশের সর্বত্র রয়েছে সোনালু গাছ। এ গাছের পাতা, ফল ও বাকলের রয়েছে ঔষধি গুণাগুণ। গবাদিপশুর চিকিৎসায় এর ফল ব্যবহার করা হয়। এটি ডায়রিয়া ও বহুমূত্র রোগের জন্য ব্যবহৃত হয়।
সোনালু ফল ও ফুল বানরের খুব প্রিয় খাবার। এজন্য কোন কোন অঞ্চলে সোনালুর ফলকে বাঁদরলাঠিও বলা হয়। কুড়িগ্রামের বিভিন্ন স্থানে গ্রীষ্মের দক্ষিণা হাওয়ায় সোনা ঝড়া সোনালু ফুল যেন প্রকৃতির কানে দুল হয়ে দুলছে। প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে তুলেছে সোনালু বা বাঁদরলাঠি ফুল।
ঢাকানিউজ২৪.কম / জাকারিয়া মিঞা/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: