• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

অস্তিত্ব সংকটে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য শাড়ি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০৮ ফেরুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০:১২ এএম
অস্তিত্ব সংকটে
টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য শাড়ি

নিউজ ডেস্ক : টাঙ্গাইল তথা বাংলাদেশের ঐতিহ্য টাঙ্গাইল শাড়ি ভারত নিজেদের দাবি করে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) করে নেয়ায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এতে চরম ক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্ট মালিক ও শ্রমিকরা। দেশের এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। এরই মধ্যে বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয় টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। খুব শিগগিরই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল, কালিহাতি উপজেলার বল্লা, সদর উপজেলার পোড়াবাড়ি ও চাড়াবাড়িসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এ শাড়ি তৈরি করছেন তাঁতিরা। যুগের পরিবর্তনে এনেছেন আধুনিকতার ছোঁয়া। টাঙ্গাইল শাড়ি গর্ভের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে সারা দেশসহ বিশ্ব বাজারেও জায়গা করে নিয়েছে।

এ ঐতিহ্যবাহী শাড়ি প্রতিবেশী ভারত টাঙ্গাইলের তাদের দাবি করে ২ফেব্রুয়ারি জিআই স্বীকৃতি নেয়ায় তাঁত শাড়ি সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিকসহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অনেকটাই অবাক হয়েছেন। সারা বিশ্ব যেখানে জানে টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের ঐতিহ্য। হঠাৎ এ শাড়িকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য দাবি করে জিআই স্বীকৃতি নেয়ায় প্রকৃত টাঙ্গাইল শাড়ি এখন একরকম অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। হুমকির মুখে পড়েছেন এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় সাড়ে তিন লাখ মালিক-শ্রমিক।

শ্রমিকরা ও তাঁত মালিক বলছেন, ১৯৭১ সালে অনেক তাঁত মালিক শ্রমিক ভারতে গিয়ে টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি করছেন। কিন্তু তারা তো টাঙ্গাইল থেকেই শিখেছেন এ শাড়ি কীভাবে তৈরি করতে হয়। তাহলে কীভাবে এ শাড়ি ভারতের উৎপাদিত শাড়ি হতে পারে এমন প্রশ্ন  ছুড়েছেন এ শিল্পের মালিক-শ্রমিকসহ বিভিন্ন মহল।
 
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের অধ্যাপক ড. জয়কৃষ্ণ সাহা জানান, ৫০০ বছর আগে টাঙ্গাইলে ধলেশ্বরী নদীর পাড় ঘেঁষে মসলিন শাড়িসহ অন্যান্য শাড়ি তৈরি শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইলে বসাক পরিবার এ শিল্পের বিকাশ ঘটায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত কিছু লোক ভারতে চলে যায় এবং সামান্য কিছু তাঁতে সেখানে শাড়ি তৈরি শুরু করেন। 

যদি এ শাড়ির উৎপত্তি ভারতেই হতো, তাহলে কোনভাবেই টাঙ্গাইল শাড়ি নামকরণ হতো না। ফুলিয়া শাড়ি অথবা পশ্চিমবঙ্গ শাড়ি নামেই নামকরণ হতো। টাঙ্গাইল যেহেতু বাংলাদেশের একটি জেলা, আর সেখানেই টাঙ্গাইল শাড়ির উৎপত্তি। তাই এর উৎপত্তি যে টাঙ্গাইলেই তা খুব সহজেই বোঝা যায়। টাঙ্গাইল শাড়ি ভারতীয়দের দাবি করা লজ্জার বিষয় বলেও মনে করেন তিনি।

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল এলাকার তাঁত মালিক সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক জানান, টাঙ্গাইল শাড়ির গোড়া পত্তন টাঙ্গাইলেই। এ শাড়ি তৈরির জন্য যে আবহাওয়া সেটি শুধু মাত্র টাঙ্গাইলেই রয়েছে। যে শত শত বছর আগে থেকে তাঁতিরা এ এলাকায় বসতি গড়ে তুলেছেন এবং তাদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় এ তাঁত শাড়ি দিন দিন বিস্তৃতি লাভ করেছে। টাঙ্গাইল শাড়ি ভারতের দাবি করাকে খুবই লজ্জাজনক মনে করছেন তিনিও। 
 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image