• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

জাতীয় পার্টির পৌণে ৭শ নেতাকর্মীর পদত্যাগ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৭:৩৩ পিএম
জাতীয় পার্টির পৌণে ৭শ নেতাকর্মীর পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু নেতাকর্মীদের সঙ্গে অন্যায় ও জুলুমের অভিযোগ তুলে ঢাকা মহানগরীর ১০টি থানার ৬৭১জন নেতাকর্মী গণ পদত্যাগ করেছে। থানাগুলো হলো- মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরে-ই-বাংলা নগর, হাতিরঝিল,পল্লবী, মিরপুর,বাড্ডা, রূপনগর,দারুস সালাম ও ক্যান্টনম্যান্ট থানা।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটরিয়ামে জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে গণ পদত্যাগ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন নেতারা। 

এসময় বক্তারা বলেন, পল্লীবন্ধু এরশাদ বিহীন বর্তমান চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টিকে গুছিয়ে নিতে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি দলের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে সরকারের সাথে আঁতাত করে নির্বাচন করেছেন। নেতাকর্মীরা বর্তমান চেয়ারম্যানকে জনবন্ধু হিসেবে স্বীকার করেন না। তাকে অব্যাহতি দেয়া হবে। মানুষ এরশাদকে স্বৈরাচার বলেন। কিন্তু আসল স্বৈরাচার হল বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এভাবে তিনি দলকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। তার লজ্জা থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পাঠান। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে বর্তমানে যিনি চেয়ারম্যান পদে অধষ্ঠিত আছেন-সেই জিএম কাদের এক বছর আগে থেকেই বলে আসছেন, জাতীয় পার্টি একক ভাবে নির্বাচন করবে। সেই ভাবে তিনি বক্তৃতা বিবৃতি এবং মিডিয়ায় কথা বলে এসেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে গরম গরম কথা বলে নিজেকে বিরোধী নেতা হিসেবে জাহির করার চেষ্টাও করেছেন। আমরাও তার প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনের আগে আমরা বুঝতে পারলাম তিনি গোপনে সরকারের সাথে আঁতাত করে নিজের স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব ৩০০ আসন থেকে প্রার্থী মনোনীত করার পর মাত্র ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাবার বিনিময়ে গোটা পার্টিকেই বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। আর সমঝোতা করে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ মাত্র ১১ জন প্রার্থী নির্বাচনে এমপি হয়ে এসেছেন।

মতাবস্থায় জাতীয় পার্টির নিবেদিত প্রাণ নেতা ও কর্মী সমর্থকরা চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। পার্টির তৃণমূল পর্যায় থেকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবার জন্য চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের পদত্যাগের দাবী ওঠে। পার্টির এই দুরবস্থার মধ্যেও চেয়ারম্যান সেচ্ছাচারিতার নিকৃষ্ট উদাহরন সৃষ্টি করে পার্টির নিবেদিত প্রাণ নেতাদেরকে একের পর এক অব্যাহতি দিয়ে চলেছেন। তিনি পল্লীবন্ধু এরশাদের নাম নিশানা মুছে দেয়ার হীন চক্রান্ত করে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যান জি এম কাদের পার্টির নেতা কর্মীদের প্রতিবাদের ভাষা বুঝতে না পেরে প্রতিহিংসা বশতঃ পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু এবং ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরীকে পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

এছাড়াও কয়েকজন নেতাকে মৌখিক ভাবে অব্যাহতির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। বিগত সময়ে সারাদেশে করোনা মহামারীর সময় ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সফিকুল ইসলাম সেন্টুর নেতৃত্বে ঢাকা মহানগরের ২৫ টি থানা ও ৫৪ টি ওয়ার্ড সম্মেলন সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছেন। আর সেই ত্যাগি নেতাকে কোন রকম কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান না করে সরাসরি অব্যহতি দিয়েছেন। যাহা শিষ্টাচার বহির্ভূত। এমতাবস্থায় আমরা এরশাদ প্রেমিক নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন তার বিপর্যন্ত সংগঠনে অবস্থান করে প্রাণপ্রিয় নেতা পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির ধ্বংস দেখতে চাই না। তাই আমরা জি এম কাদেরের সংগঠন থেকে আজ গণ পদত্যাগের ঘোষণা করছি। একই সাথে আপনাদের কাছে এই অঙ্গীকারও করে রাখছি, অল্প সময়ের ব্যবধানে আমরা পল্লীবন্ধু এরশাদের চেতনা প্রেরনা ও নীতি আর্দশ বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকবো। সত্যের পথে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত ইনশাল্লাহ।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব একটি ফাঁদের মধ্যে পড়ে গেছেন। তার আশেপাশে এখন যারা আছেন, সেসব হলো ঘুঘুর ফাঁদ, এই ফাঁদ থেকে তিনি (জিএম কাদের) বেরুতে পারবেন না। এই ফাঁদের সুতা মহাসচিবের হাতে, আর সে সুতায় ঘুরছেন জি এম কাদের।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদপুর থানা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু মিয়া, পল্লবী থানার সভাপতি আসাদ খান শামীম, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহিনা আরা সুলতানা রিমা, ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সাবেক সদস্য সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পাঠান ও জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক সফিকুর রহমান সেন্টু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, জাতীয় পার্টির সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরী প্রমুখ। 

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস/সানি

আরো পড়ুন

banner image
banner image