• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৩ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

খোয়াসাগর দিঘির পাড়ে ‘ডিসি পার্ক’


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৩ ফেরুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:১২ এএম
খোয়াসাগর দিঘির পাড়ে
ডিসি পার্ক

নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুর জেলার ইতিহাস এবং ঐতিহ্য বিজড়িত খোয়াসাগর দিঘির পশ্চিম পাড়ে ‘ডিসি পার্ক’ সাইনবোর্ড লাগানো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে লক্ষ্মীপুর জেলার খোয়াসাগর দিঘী পার্কের পাশে দেখা মিলে অনেকের। তারা মনে করছেন খোয়াসাগর দিঘীর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায় পূর্বতন জেলা প্রশাসকগণের পরিকল্পনায় খোয়াসাগর দিঘীর পশ্চিম পাড়ে সরকারি খাস জমিতে পার্ক স্থাপনের নিমিত্তে প্রায় দেড় বছর পূর্বে স্থাপিত একটি সাইনবোর্ডকে কেন্দ্র করে ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু খোয়াসাগর  দিঘীর নামের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।

লক্ষ্মীপুরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের পাতা থেকে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার রায়পুর-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের পাশেই প্রায় ২২ একর জুড়ে বিস্তৃত খোয়াসাগর দিঘিটি। এর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তাকালে কুয়াশাছন্ন দেখা মিলে। তাই এ দিঘিকে বলা হয় খোয়া বা কুয়াশাময় দীঘি। প্রায় পৌনে ৩'শ বছরের পুরনো বিশাল আয়তনের দিঘিটি খোয়াসাগর দীঘি নামেই পরিচিত।

আনুমানিক ১৭৫৫ সালের দিকে দালাল বাজারের জমিদার ব্রজবল্লভ রায় দিঘিটি খনন করেন। পরবর্তীতে জমিদার রাজা গৌড় কিশোর রায় দিঘিটির পুনরায় সংস্কার করেন। প্রাচীন এই দিঘিকে ঘিরে জড়িয়ে আছে নানা কল্পকাহিনী। দীর্ঘ সময় দিঘিটি অযত্নে পড়ে ছিল। তবে সেটি সৌন্দর্য বর্ধনের উদ্যোগ নেয় লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন। দিঘির দুইপাড়ে শোভাবর্ধন করা হয়। দিঘির পানিতে চাষ করা হয় মাছ। সবকিছু তদারকি করা হয় লক্ষ্মীপুর জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে।

এদিকে সৌন্দর্য বর্ধনের পর লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের খুব কাছাকাছি হওয়ায় দিঘিটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠে। দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এখানে আসে। দিঘিটি লক্ষ্মীপুর জেলাবাসীর জন্য গর্বের নাম খোয়া সাগরদিঘি।

এই বিষয় জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান মুঠোফোনে জানান, খোয়াসাগর দিঘীটি লক্ষ্মীপুর জেলার ঐতিহ্যের ধারক এবং বাহক। লক্ষ্মীপুর জেলার পূর্বতন জেলা প্রশাসকগণ লক্ষ্মীপুরের মানুষের জন্য বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে খোয়াসাগর দিঘীর পশ্চিম পাড়ে ভিন্ন তফসিলে সরকারি খাস জমিতে একটি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা করেছেন। পূর্বের পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় বর্তমান জেলা প্রশাসনেরও খোয়াসাগর দিঘীর পশ্চিম পাড়ের ভিন্ন তফসিলের সরকারি খাস জমিতে বিনোদন পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী খোয়াসাগর দিঘীর নাম পরিবর্তনের কোনো পরিকল্পনা জেলা প্রশাসনের নেই বরং এটির চার পাশ বাধাই করে সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যমে এটি আরও আকর্ষনীয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শত বছর পূর্বের এই খোয়া সাগরদিঘীর নাম খোয়াসাগরই থাকবে।

এছাড়া খোয়াসাগর দিঘীর পাড়ে বিগত কিছু দিন পূর্বে খোয়াসাগর পার্কিং স্পট স্থাপন করা হয়।প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকরা তাদের গাড়ি সেখানে পার্ক করে দিঘীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন। ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের সুবিধা বিবেচনায় পূর্বতন জেলা প্রশাসক দিঘীর পাড়ে ওয়াশব্লক নির্মাণ করেছেন এবং পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য ছাতা স্থাপন করছেন।
খোয়াসাগর দিঘীর উন্নয়ন,রক্ষনাবেক্ষন এবং দিঘীর পূর্ব পাড় বাধাইয়ের উদ্দেশ্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image