জালাল উদ্দিন মন্ডল নান্দাইল প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজলা সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিং মাধ্যমে অস্থায়ী চাকুরী পায় সুজন ও মোশারফ হোসেন নামে দুই যুবক। কিন্তুু নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে তারা বেতন ভাতা পালেও কাজ করতেন সদ্য সাবেক এমপি আলহাজ আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের নিজস্ব খামার ও নিজ বাড়িতে।
জানা যায়, ২০১৯ সনে নান্দাইল উপজেলা হাসপাতালের পরিছন্নতাকর্মী হিসাবে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পেয়েছিল মোশারফ হােসেন। মােশারফ হােসেন নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীপুর ইউনিয়নের দেউলডাংরা গ্রামের মৃত আব্দুর রেজাকের পুত্র। মোশারফ হোসেন ২০১৯ সনের এপ্রিল মাসে চাকুরীতে যোগদানের দিন থেকেই ২০২০সালের জুলাই মাস পর্যন্ত হাসপাতালের পরিছন্নতা কর্মীর কাজ না করে সাবেক এমপি’র বাস ভবনে গৃহপরিচালকের কাজ করেছেন এবং বেতন নিতেন হাসপাতাল থেকে। পরবর্তীতে বেতন ভাতা সন্তোষজনক না হওয়ায় অবশেষে আত্মীয় স্বজনদের সহযোগীতায় পাড়ি জমায় বিদেশ। তাঁর অবর্তমানে একই ইউনিয়নের কােনাদেউল ডাংরা গ্রামের নূর উদ্দিনের পুত্র সুজন মিয়া ২০২০ সনের আগস্ট মাসে আউটসোসিংয়ে একই পদে যোগদান করে। তবে তিনিও যোগদানের দিন থেকে সাবেক এমপি’র নিজ বাড়ি জাহাঙ্গীরপুরে গরু-ছাগলর খামারে কাজ করেন এবং ২০২৩ সনের নভেম্বর পর্যন্ত চাকুরী করেছেন। এখন ওই এমপি ক্ষমতায় না থাকায় তিনি বাড়ির কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি হাসপাতালেও আসনে না।
মােশারফ হোসেন ও সুজন মিয়া উভয়েই এমপি’র বিশেষ বলয়ে হাসপাতালের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা বেতন- ভাতা নিতেন। এভাবেই চলছিল হাসপাতালের নামে সাবেক এমপির বাড়ির কাজকর্ম সম্পাদন। এ বিষয়ে সুজন মিয়া বলেন, হাসপাতাল থেকে পাইতাম তিন হাজার টাকা, আর এমপি সাহেব দিতেন চার হাজার টাকা। তবে হাসপাতাল থেকে প্রতি মাসে টাকা আনলেও কাজ করতাম এমপি’র বাড়িতে। আমি গরীব মানুষ, আমার চাকুরিটা যদি ফিরত পেতাম, তাহলে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে চলতে পারতাম।
উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এনামুল হক বাবুল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মিটিংয়ে গেছি, রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে বল্লে-আমি স্বাক্ষর করে চলে আসি। অন্য সদস্য আলম ফরাজী বলেন, হাসপাতালের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকারীরা কোথায় কাজ করবেন এটা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব ।
এ বিষয়ে নান্দাইল উপজলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রশীদ বলেন, উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাবেক এমপি ও কমিটির সদস্যের জোর সুপারিশে অস্থায়ী নিয়ােগ দিতে বাধ্য হই। এসব কারনে আমি বেশ কয়েকবার বদলী নিতে চাইলেও আমার ঊর্ধ্বতমদের মাধ্যমে বদলী বাতিল করা হয়, তাছাড়া এসব অনিয়মের ব্যপারে মুখ খুলতে চাইলে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার ভয়ে আমি কিছু বলতে পারিনি। বিষয়টি সত্যিই অনিয়ম ও দুর্নীতির সামিল। হাসপাতাল বেশ কিছু অনিয়ম আছে। আশা করি এবার মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রীর সহযোগীতায় সবধরনের অনিয়ম নির্মূল করতে পারবো ।
নান্দাইল আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমিটির সভাপতি আনােয়ারুল আবদীন খান তুহিনের সাথে মুঠুফোনে এবিষয়ে যোগাযােগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: