• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:১৭ পিএম
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে ব্লিংকেন

নিউজ ডেস্ক:  বাংলাদেশে নির্বাচনে অনিয়ম করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে সিদ্বান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

একই দিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে ব্লিংকেন এক টুইটে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে আজ আমি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এ নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থাকে যাঁরা অবমূল্যায়ন করবেন অথবা এর সঙ্গে যাঁরা জড়িত থাকবেন বা যাঁরা দায়ী হবেন, তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ওপর আমরা ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন উৎসাহিত করতে ভিসা নীতির ঘোষণা’ শিরোনামে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে আমি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ধারা ২১২(এ)(৩)(সি)(৩সি)-এর অধীনে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ মে বাংলাদেশকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। 

গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে– ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেওয়া এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।

ব্লিংকেন আরও বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সবার। যাঁরা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চান, তাঁদের সবাইকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।

ব্রিফিংয়ে ম্যাথিউ মিলারও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নতুন ভিসা নীতি সম্পর্কে জানান। বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশে মিলার বলেন, আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে রয়েছি। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। আর গণতন্ত্রকে সহায়তা করতে আমরা নতুন এ ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। 

এ সময়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, তার মানে– বাংলাদেশের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি? এর উত্তরে মুখপাত্র বলেন, না; কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। তবে আমরা যদি নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার কোনো কর্মকাণ্ড দেখি, তাহলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিতে পারব। এ নীতির আওতায় আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব– এ বার্তাটি আমরা দিতে চেয়েছি। 

ভিসার বিষয়টি যেহেতু গোপনীয়, ফলে যখন ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে, তা সবাই জানতে পারবেন কিনা– এমন প্রশ্নের উত্তরে ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিষয়টি সঠিক। সবাই জানতে পারবেন না। তবে যাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে, তাঁদের আমরা জানিয়ে দেব। মূলকথা হচ্ছে– বাংলাদেশে যাঁরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করার কথা চিন্তা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

আসন্ন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কারচুপির আশঙ্কা করছে কিনা বা এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকার বা প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করা হচ্ছে কিনা– তা নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। উত্তরে মুখপাত্র বলেন, না; এটি আমাদের পক্ষ থেকে একটি বার্তা দেওয়া– যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। সেই সঙ্গে যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দেবে, তাদের যে কাউকে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে পারি। এটি সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগসহ সবার জন্য একটি বার্তা।

সাধারণত ভিসা নিষেধাজ্ঞা তখনই দেওয়া হয়, যখন কোনো প্রমাণ থাকে। তবে এখানে ভবিষ্যতে ঘটনা ঘটতে পারে; সেই আশঙ্কা থেকে এ নীতি নেওয়া হয়েছে কিনা– এমন প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র বলেন, যদি কোনো অনিয়মের প্রমাণ থাকে, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে সবাই একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে আসছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কোনো আহ্বান জানিয়েছে– এমন প্রশ্নে ম্যাথিউ মিলার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই প্রতিশ্রুতিকে সহায়তা করতে আমরা আজ ভিসা নীতি ঘোষণা করছি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত নতুন ভিসা নীতির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সরকার এ নিয়ে বিচলিত নয়। বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর।  

ইউএনবিকে দেওয়া এক বক্তব্যে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটা কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়। নতুন ভিসা নীতি নিয়ে বরং বিএনপির চিন্তিত হওয়া উচিত। কারণ নির্বাচনের আগে বা চলাকালীন সহিংসতা করলে এই নিষেধাজ্ঞা তাদের ওপর আরোপ হতে পারে।’ নতুন মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে বিস্তারিত জেনে আজ বৃহস্পতিবার এর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে জানান । 

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image