• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কর্মী-সমাবেশে থাকার নির্দেশ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ২৮ ফেরুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০২:০৪ পিএম
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে
কর্মী-সমাবেশে থাকার নির্দেশ

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় একটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নস্থ নছিমুন্নেছা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ওই কর্মী সমাবেশের মাধ্যমিক পর্যায়ে স্থানীয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি 'বাধ্যতামূলক' করা হয়েছে সমাবেশ আয়োজকদের পক্ষ থেকে। এছাড়া কর্মী সমাবেশ সফল করতে তোরণ ও গেট নির্মাণ করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক দলের কর্মী সমাবেশের যোগ দিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের তাগিদ দেওয়ার ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে বিভিন্ন মহলে। কর্মী সমাবেশে লোকজন বেশি উপস্থিত করতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে মর্মে গুঞ্জন উঠেছে। তবে এনিয়ে কেউ মুখ না খুললেও সমাবেশের আয়োজকদের দাবি, 'কর্মী সমাবেশে ধর্মমন্ত্রীর 'সংর্বধনা' অনুষ্ঠানেরও আয়োজন রয়েছে।'

স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের ওই কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা রয়েছে  জামালপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল। কর্মী সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য আয়োজকদের পক্ষ থেকে পোড়ারচর আব্দুস সাত্তার উচ্চবিদ্যালয়, গাইবান্ধা সুরুজ্জাহান উচ্চবিদ্যালয়, গাইবান্ধা সাজেদা মাহমুদ উচ্চবিদ্যালয়, আহম্মদপুর
উচ্চবিদ্যালয়, পোড়ারচর এসএমএ দাখিল মাদ্রাসা, নছিমুন্নেছা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা, পোড়ারচর টেকনিকেল অ্যান্ড বিএম কলেজের প্রধানদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নছিমুন্নেছা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে কর্মী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সমাবেশ স্থলে ছামিয়ানা টানানো কাজও শেষ। ইতিমধ্যে কর্মী-সমাবেশ সফল করতে বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে নৌকার তোরণসহ বিশাল বিশাল গেট নির্মাণ করা হয়েছে। এসব তোরণ ও গেটে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে ধর্মমন্ত্রীর ছবিসহ সংবলিত ব্যানার। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ধর্মমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ ও গেট নির্মাণ করা হয়েছে।

জানা যায়, কর্মী-সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতি থেকে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি থাকার কথা রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সালাম, যুগ্ম সাধারণ ও গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনছারী, কোষাধ্যক্ষ মোরশেদুর রহমান খান মাছুম, উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য আজিজুর রহমান ফুটু, নাদের হোসেন এবং সদস্য আবুল কাশেম।

ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা জানিয়েছেন, ধর্মমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ ও গেট নির্মাণ করতেও আয়োজকরা বলেছেন।

গাইবান্ধা সাজেদা-মাহমুদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, 'কর্মী-সমাবেশে ধর্মমন্ত্রীকে সংর্বধান দেওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাওয়াত দিয়েছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে সমাবেশ স্থলে যেতে বলা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি  অনেকটাই 'বাধ্যতামূলক'। সেখানে প্রধান অতিথি ধর্মমন্ত্রীকে সংর্বধনা দিতে আমরা ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছি।'

আহম্মদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহনেওয়াজ বলেন, 'গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ বারী আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে কর্মী সমাবেশে যেতে বলেছেন। কর্মী-সমাবেশ সফল করতে তোরণ ও গেট নির্মাণ করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থের অভাবে সেটা করতে পারিনি। শিশু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আড়াই মাইল দূরের পথ পাড়ি দিয়ে কীভাবে যাব, সেটাই বারবার ভাবছি।'

পোড়ারচর আব্দুস সাত্তার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জিয়াউল হক বলেন, 'ধর্মমন্ত্রী সংবর্ধনা দেওয়া জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরসহ শিক্ষকদের আওয়ামী লীগের কর্মী-সমাবেশে যাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ।

গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আজাদ বারী বলেন, 'ইউনিয়নের সবগুলো হাইস্কুল এবং দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের কর্মী-সমাবেশে যোগদান করতে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সমাবেশে যোগ দেওয়ার বিষয়টি তাঁদের মর্জি।'

গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, 'ইউনিয়নের সবগুলো হাইস্কুল এবং দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষকদের কর্মী সমাবেশে যোগদান করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।'

আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মী সমাবেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কেনো নিয়ে যেতে শিক্ষকদের বলা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি পাল্টে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, 'দলীয় সমাবেশে যেতে দোষ কী? শিক্ষার্থীরা কী আওয়ামী লীগের কর্মী হতে পারবে না?

গাইবান্ধা সাজেদা-মাহমুদ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া, আশামনি, জসিম, সবুজসহ অনেকেই জানায়, 'আওয়ামী লীগের সমাবেশে যাওয়া জন্য স্যারেরা আমাদের নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। আজ আমাদের সঙ্গে নিয়ে স্যারেরা আওয়ামী লীগের সমাবেশে যাবেন। সেকারণেই স্যারেরা সব ছাত্র-ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের হাজির হতে বলেছেন।'

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image