নিজস্ব প্রতিবেদক : ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) যুগোপযোগী ও শক্তিশালী করতে ছয়টি বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ জানিয়েছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক প্রতিনিধিরা।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত '২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ' বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার ৮ম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ জানানো হয়।
সেগুলো হলো-
(১) আইনের ধারা ৪ ও ৭ বিলুপ্ত করা, অর্থাৎ সব পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে 'ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান' নিষিদ্ধ করা।
(২) তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা।
(৩) তামাক কোম্পানির যেকোনও ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।
(৪) তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
(৫) বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন ও খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা।
(৬) ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ বলা হয়, ২০১৬ সালে বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যববহার সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার ঘোষণা দেন। একই সাথে এই লক্ষ্য অর্জনে তিনটি দিক-নির্দেশনা দেন। সেগুলো হলো- স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবহার করে একটি তহবিল গঠন করা; তামাকের উপর বর্তমান শুল্ক-কাঠামো সহজ করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি গ্রহণ করা এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের জন্য সব ধরণের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন ঘোষণা দেওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, আজকের এই দিনে দক্ষিণ এশীয় স্পীকার্স সামিটের সমাপনী ভাষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে তামাকের ব্যবহার নির্মূল করার ঘোষণা দেন। একই সাথে এই লক্ষ্য অর্জনে তিনটি পদক্ষেপের কথা জানান। কিন্তু এখনো সেগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে তামাক নিয়ন্ত্রণে আমরা আশানুরূপ ফল পাচ্ছি না। তাই অবিলম্বে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)-বাংলাদেশের লিড পলিসি এডভাইজার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিজ-এর হেড অব প্রোগ্রাম (টোব্যাকো কন্ট্রোল) মো. শফিকুল ইসলাম, সিটিএফকের অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার মো. আতাউর রহমান, আব্দুস সালাম মিয়া ও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস/সানি
আপনার মতামত লিখুন: