নিউজ ডেস্ক : তাহসিন ইনাম রিয়াদের ১৪ বছরের জীবনে একটু একটু করে নিজেকে কোথাও দাঁড় করানোর যে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলো রিয়াদ ও তার পরিবার, সে বছরই তার একটি উজ্জ্বল অর্জন রচিত হয়। অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রিয়াদের ছবি স্থান পায় প্রধানমন্ত্রীর ঈদের শুভেচ্ছা কার্ডে।রিয়াদের মা রাবেয়া বেগম শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া স্বীকৃতি তাদের জীবনের অনেক বড় আনন্দ আর অনুপ্রেরণার জায়গা। তাদের দুই সন্তানকে তারা অনেক কষ্টে মানুষ করছেন। মানুষ যাদেরকে পিছিয়ে পড়া শিশু বলে থাকে, তারাই আজ পায় প্রধানমন্ত্রীর সম্মাননা। এই সম্মাননার জন্য তাদের ১ লাখ টাকা সম্মানিও দেওয়া হয়। রাবেয়া বলেন, তাদের পড়াশোনার খরচও অনেক বেশি। তাই এমন উদ্যোগ এই শিশুদের এগিয়ে নিতে আরও বেশি বেশি প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এই সংখ্যা ২ লাখেরও বেশি। এখনো সরকারের তালিকাভুক্ত হয়নি অনেকে। পরিবার ও অটিস্টিক শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে তাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ জরুরি বলে মন্তব্য করেন বিজ্ঞজনেরা। তবে আর দশটা শিশুর চেয়ে তাদের শিক্ষাব্যয় ও সময় অনেক বেশি লাগে, তাই সরকারি ও বেসরকারিভাবে এইসব উদ্যোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা; কারণ দেশে এখনো এমন শিশুদের এগিয়ে নিতে আয়ের জায়গাকে সেভাবে আমলে নিচ্ছে না কোনো পক্ষই—এমন বাস্তবতার মধ্যে ২ এপ্রিল ‘সচেতনতা-স্বীকৃতি-মূল্যায়ন: শুধু বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা’ প্রতিপাদ্য করে পালিত হচ্ছে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস।
এই কার্যক্রম পরিচালনা করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিষ্ঠান অধিশাখা-২-এর উপপরিচালক মো. রেজাউর রহমান জানান, ‘আমরা সারা দেশ থকে ছবি আহ্বান করি। যারা প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে কাজ করে, তারা আমাদেরকে ছবি পাঠান। উৎসবগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখে ছবি মনোনয়ন করা হয়। এ বছর আটটি প্রতিষ্ঠানের ৯৩টি ছবি জমা পড়ে। ৬৮টি ছবি মনোনয়ন করে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাই। এই সুযোগ থেকে বাদ পড়ে না প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরাও।’
২০১০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর পবিত্র ঈদুল ফিতর, পবিত্র ঈদুল আজহা, শুভ নববর্ষ, শুভ বড়দিন এবং খ্রিষ্টীয় নববর্ষ শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পায় প্রতিবন্ধী শিশুদের আঁকা ছবি। এযাবৎ ২ হাজার ৪০৩ প্রতিবন্ধী শিশুর ছবি স্থান পায় শুভেচ্ছা কার্ডে। তার মধ্যে ৭২ জন অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুর ছবিও আছে। তাদের একজন আল মুনতাসির সাওম—সাওমের মা আফসানা মিমি বলেন, তার দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সাওম সবার বড়। তাদের অনেক কষ্টে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনছেন তারা। দিনাজপুর থেকে ঢাকায় এসেছেন ছেলেকে নিয়ে। সাওম তৈরি ফাউন্ডেশনের স্কুল ফর গিফটেড চিলড্রেনের শিক্ষার্থী। তৈরি ফাউন্ডেশনের পরিচালক মারুফা হোসেন বলেন, তাদের অর্থনৈতিক দিকগুলো বিবেচনা করে এমন উদ্যোগ আরো বেশি হতে পারে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: