• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৫ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

উত্তপ্ত মিয়ানমার, হেলিকপ্টার হামলার পর সীমান্তের পরিস্থিতি থমথমে  


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ০৫ ফেরুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:২৮ পিএম
উত্তপ্ত মিয়ানমার, হেলিকপ্টার হামলার পর
সীমান্তের পরিস্থিতি থমথমে  

কক্সবাজার প্রতিনিধি : মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের বাহিনী বিজিপির সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে দেশটির বিদ্রোহী দল আরকান আর্মির। আরকান আর্মির দখলে নেওয়া তুমব্রু রাইট ক্যাম্প লক্ষ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অ্যাটাক হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে এই হামলা চলছে। এদিকে আরাকান আর্মিও পাল্টা গুলি ছুঁড়ছে। এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া।

বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সীমান্তে বসবাসকারী জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে কাজ করছে। সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এলাকায় অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, কোনোভাবেই যেন বহিরাগত নাগরিক অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখছে পুলিশ প্রশাসন।এসআই মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বলেন, এপারের সীমান্ত ঘেষা স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং পুলিশ। 

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি'এর ৯৫ জন সদস্যের মধ্যে গোলাগুলিতে আহত ১৫ জনের মধ্যে ৯ জনকে কক্সবাজার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যদের তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। বিজিবির গণ সংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেন, অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করা বিজিপি সদস্যদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।পরিস্থিতি বিবেচনায় মিয়ানমারের সঙ্গে থাকা গোটা সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি। কক্সবাজার ও বান্দরবান পুলিশকেও সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।এদিকে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্ত ঘেষা গ্রামের লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে  আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জনসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বিজিপির আরও ২৭ জন পালিয়ে এলো বাংলাদেশে: মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি) আরও ২৭ জন সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। এ নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৫ জনে। রবিবার ৫ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) সকাল ৮টা পর্যন্ত ৯৫ জনের পালিয়ে আসার এই তথ্য পাওয়া গেছে সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বিজিবি তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে।

এর আগে সোমবার প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, ১৪ জন বিজিপি সদস্য নিরাপদে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করেছেন। তারা আটক আছেন। দু’দেশের কূটনৈতিক তৎপরতা শেষে তাদের ফেরত পাঠানো হবে।শরীফুল ইসলাম বলেন, রবিবার ভোর থেকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শুরু করেন। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত এলাকা দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত পালিয়ে আসা বিজিপির সংখ্যা ছিল ৩৯ জন। রাত ১২টার দিকে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৮ জনে। সকালে এসেছেন আরও ২৭ জন। মোট ৯৫ জন। এর বাইরে গতকাল এর মধ্যে আহত ১৫ জন বিজিপি সদস্যের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

আরাকান আর্মি হলো মিয়ানমারের জান্তা সরকার উৎখাতে লড়াইরত কয়েকটি সংগঠনের জোট। এখানে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং টা আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) মতো সংগঠনের যোদ্ধারা রয়েছেন।গত বছর ২৭ অক্টোবরে অপারেশন ১০২৭ নামে জান্তাবিরোধী অভিযান শুরু করেছে আরাকান আর্মি। এরপর থেকে তারা উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নিয়েছে। তার মধ্যে ২০টি শহর এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পথ রয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশ সীমান্তেও সংঘর্ষ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। দুপক্ষের ছোড়া গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়ছে বাংলাদেশের ভেতরে।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা ফিরিয়ে দিল বিজিবি: কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে একটি রোহিঙ্গা পরিবারের পাঁচ সদস্যকে বাধা দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং উলুবনিয়া পয়েন্টে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। পরে তাদের পুশব্যাক করে বিজিবি।অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারী মিয়ানমারের নাগরিকরা হলেন- মংডু জেলার ভৌগনী গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে মো. রহমত উল্লাহ (৩০), তার স্ত্রী  সাজেদা (২৫), ছেলে হায়াতুন নূর (৫), জোনাইদ (৩) ও মেয়ে আমাতনুর (দেড় বছর)।হোয়াইক্যং এলাকার লোকজন বলেন, মিয়ানমারে কয়েক দিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। এ কারণে কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান করছিল।  দুপুরের দিকে রোহিঙ্গা পরিবারটি অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে বিজিবি তাদের আটকে দেয়। 

আমরা কিছু জেলেদের কাছ থেকে শুনেছি শতাধিক রোহিঙ্গা সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করছে।বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, হোয়াইক্যং উলুবনিয়া পয়েন্ট দিয়ে একটি রোহিঙ্গা পরিবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। 

পরে বিজিবি তাদের পুশব্যাক করে। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image