• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখ‌ছে ইউপি সদস্যরা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:৩২ পিএম
খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখ‌ছে
ইউপি সদস্যরা

জহিরুল ইসলাম সানি

চলমান বৈ‌শ্বিক সংকট মোকা‌বেলায় খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় নিজ নিজ অবস্থান থে‌কে ভূমিকা রাখছে ইউনিয়ন প‌রিষ‌দের নির্বাচিত সদস্যরা। 

শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়ো‌জিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ইউনিয়ন প‌রিষদ সদস্য সংস্থার (বাইসস) নেতৃবৃন্দ এসব কথা ব‌লেন। 

সংস্থার চেয়ারম‌্যান গোলাম সারোয়ার মিলনের সভাপ‌তি‌ত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট কামরুল ইসলাম এম‌পি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের দায়িত্ব অনেক। আর সে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকে বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হন, এগুলো আসলে না বোঝার কারণে। বাংলাদেশ সরকার ইউপি সদস্যদের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছে। সে দায়িত্ব সম্পর্কে তাদের ধারণা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ ইউপি সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করেছেন। শুধু জন্ম সনদ নিবন্ধকরণের উপর গুরুত্বারোপ করলে হবে না। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ গড়ার লক্ষ্যে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউপি সদস্যদের কাজ করার আহবান জানান তিনি।

এ সময় (বাইসস) এর মহা-সচিব এম সাইফুল ইসলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আমাদের সংবিধানে ১১,৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদে স্থানীয় শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিষয় সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। অনুচ্ছেদ ১১ তে প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অনুচ্ছেদ ৫৯ এ উল্লেখ রয়েছে যে, আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের উপর স্থানীয় শাসনভার প্রদান করা হবে। প্রতিষ্ঠানসমূহ আইনের মাধ্যমে প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করবে এবং আইনে নিম্নে লিখিত বিষয় সংক্রান্ত দায়িত্ব অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

পরিষদের কার্যাবলী হ‌লো- প্রশাসন ও সরকারি কর্মচারীদের কার্য, জনশৃঙ্খলা রক্ষা,জনসাধারণের জন্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং জনকল্যাণমূলক কার্য সম্পর্কিত সেবা।

তিনি বলেন, ব্রিটিশ আগমনের পূর্বে পঞ্চায়েত পরিষদের কার্যক্রম শুরু হয়। তারপর পরবর্তী সময়ে পরিষদ গঠন কাঠামো ও বিধিমালায় নানাবিধ পরিবর্তন সাধিত হলেও স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদকে একটি স্বতন্ত্র অধ্যাদেশের আওতায় আনা হয়। এতে পৌর, রাজস্ব, প্রশাসন ও উন্নয়নমূলক কার্যাদী সম্পাদন সহ ১০টি বাধ্যতামূল ও ৩৮টি ঐচ্ছিক কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়াও ৬টি উৎস থেকে কর আরোপ ক্ষমতা দেয়া হয়। 

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালিত হচ্ছে। এই আইনের মোট ১০৮টি ধারা, ১৭টি অধ্যায় ও ৫টি তফসিল রয়েছে। এই আইনে প্রথমবারের মতো জাতীয় উন্নয়নে জনগণের ভূমিকা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওয়ার্ড পর্যায়ে বছরে ২টি ওয়ার্ড সভা আয়োজনের বিধান রাখা হয়েছে। যেখানে ওয়ার্ডের সকল ভোটারগণ উপস্থিত থেকে তাদের মতামত প্রদান পূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। এতে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনেকটাই পূরণ হবে। ইউনিয়ন পরিষদের গঠন ও মেয়াদ বহাল রেখে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম বাধ্যতামূলক ও ঐচ্ছিক পৃথকভাবে না রেখে এ আইনের ২য় তফসিলে ৪৭ ধারা অনুযায়ী ৩৯টি কাজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ৩৯টি কাজের মধ্যে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ শুধু মাত্র নাগরিক সনদ প্রদান ও সংরক্ষণ, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধীকরণ ও সনদ প্রদান, সরকারি বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের জন্য বিধবা, এতিম, গরিব ও দুস্থ ব্যক্তিদের তালিকা প্রণয়ন ও সুবিধা প্রদান সহ সরকারি কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এম সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ সমূহ বিদ্যমান আইন ২০০৯ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে না ফলে ঠিকমতো ওয়ার্ড সভা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় জাতীয় উন্নয়নে জনগণ কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। আমাদের বলতে কোন দ্বিধা নেই যে, আমরা তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ এক কথায় বলতে "ভাল তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দার" অর্থাৎ সাংবিধানিক ও আইনানুগভাবে পূর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিদ্যমান ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে আমরা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছি না।

ইউনিয়ন পর্যায়ের স্ব-স্ব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ নিজস্ব মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত। ফলে তাদের কাজের তদারকি ব্যবস্থা যেমন দুর্বল, অন্যদিকে তারা কেউ জনগণের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এবং দায়বদ্ধও নয়। ফলে তাদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন নিয়ে যথেষ্ট সংশয় থেকে যায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর দ্বিতীয় তফসিলে ৬৩ ধারায় নিন্মুক্ত মন্ত্রণালয়/বিভাগের সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে হস্তান্তরের বিধান রাখা হয় কিন্তু তা আজ পর্যন্ত কার্যকর করার কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা (বাইসস) এর দাবী সমূহ নিচে হলো-  অবিলম্বে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ ও তৎসংশ্লিষ্ট পরিপত্র অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ সমূহ পরিচালনা নিশ্চিত করা,ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর তৃতীয় তফসিলের ৬৩ ধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে ন্যাস্ত করা।

(বাইসস) মনে করে, সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তৃণমূলে সফলভাবে বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব অপরিহার্য।

নিরাপদ খাদ্য অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা" রাষ্ট্র কর্তৃক তখনি এই কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন হবে, যখন ইউনিয়ন পরিষদের উপর এ সকল কর্মসূচি বাস্তবায়নের পূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করা হবে। ইউনিয়ন পরিষদ তথা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদেরকে এই দায়িত্বে আদৌ রাখা হয়নি। ফলে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর দিকে যেমন সরকারের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অপরদিকে দেশ উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় পিছিয়ে রয়েছে। রাষ্ট্রীয় সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যথাযত বাস্তবায়ন ও কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে ইউনিয়ন পরিষদ তথা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই।

এ সময় সরকারের দায়িত্বশীল সকল মহলের কাছে (বাইসস) কর্তৃক সুপারিসকৃত দেশের বিদ্যমান ইউনিয়ন পরিষদ আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে হস্তান্তরযোগ্য সরকারি লোকবল ও কার্যাবলী অবিলম্বে ন্যাস্ত করার জন্য জোর দাবি জানায় তারা।অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কাজী মামুনুর রশিদ (পৃষ্ঠপোষক, বাইসস)। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আগত নির্বাচিত সদস্যবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image