• ঢাকা
  • রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

মুক্তিযোদ্ধাদের ধ্বংসের ৫৩বছর পর চৌকাবিলে নির্মিত হচ্ছে নতুন সেতু


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:১১ পিএম
মুক্তিযোদ্ধাদের ধ্বংসের ৫৩বছর পর
চৌকাবিলে নির্মিত হচ্ছে নতুন সেতু

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের কটিয়াপুরী নামক স্থানের চৌকা বিলের ওপর থাকা একটি পাকা সেতু ধ্বংস করে দিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এই বিলের উপর নির্মিত হচ্ছে সেই সেতুটি। সেতুটি নির্মাণ করছে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।

১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে জীবন বাজি রেখে পাক হানাদারবাহিনীকে প্রতিহত করেছে। ১৯৭১ সালের ২৩নভেম্বর পাশ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণের সময় ডিনামাইট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ওই সেতুটি ধ্বংস করে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। যাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গৌরীপুরে প্রবেশ করতে না পারে।

ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে পাশে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের শিবপুর ও বলুহা গ্রামকে বিভক্ত করেছে চৌকা বিল। ওই দুই গ্রামের সংযোগস্থলে ছিল পাকা সেতু। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে পাশ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণের সময় ডিনামাইট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ওই সেতুটি ধ্বংস করে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধের পর ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়দের উদ্যোগে পারাপারে সুবিধায় সেতুর সংযোগস্থলে লোহার পাত ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়। ধ্বংসপ্রাপ্ত সেতুর সংযোগস্থলে কংক্রিট ও বাঁশের খুঁটি স্থাপন করা হয়। এর উপরে সরু লোহার পাত বসিয়ে তৈরি করা হয়েছিল সাঁকো। বাঁশের হাতল ধরে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতো দুইপাড়ের বাসিন্দারা। তারা জানান, নতুন সেতু নির্মাণ হলে বলুহা, শিবপুর, পাঁচাশি সহ কয়েক গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. হাসান আলী বলেন,  চৌকা বিলের ওপর সাঁকোটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। বড়রা হাতল ধরে পার হতে পারলেও শিশু ও বয়স্ক মানুষকে হাত ধরে পার করতে হতো। রাতের অন্ধকারে সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেক সময় নিচে পড়ে যেতো মানুষ। পাশাপাশি সেতুর অভাবে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে দুর্ভোগ পোহাতে হতো।

রামগোপাপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-আমিন জনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে চৌকা বিলের সেতু ধ্বংসের পর যোগাযোগ সুবিধায় স্থানীয় ও ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় সাঁকো নির্মাণ করা হয়। একসময় এই সাঁকো দিয়ে কম মানুষ চলাচল করতো। কিন্তু এখন আশেপাশে অনেক বাড়ি হওয়ায় মানুষের চলাচল বেড়ে গেছে। স্কুলশিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে সাঁেকা পার হয়। তাই সেতুটি নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নতুন সেতুটি নির্মিত হলে এই এলাকার মানুষের ভোগান্তির অবসান হবে।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উদ্যোগে নির্মাণ হতে চলা সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৫মিটার (গাডার ব্রিজ), যার প্রাক্কলিত মূল্য ১কোটি ১১লাখ ২৬হাজার ৭শ ৫৪টাকা, চুক্তিমূল্য ১কোটি ৫লাখ ৭০হাজার ৪শ ১৬ টাকা। নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা পাপ্পু বলেন, এই সেতুটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত হওয়ায় কাজের গুণগত মান বজায় রাখতে আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। 
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ বলেন, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে শুরু হওয়া এই সেতুটির ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। স্থানটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত হওয়ায় কোন মুক্তিযোদ্ধার নামে সেতুটির নামকরণের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।  

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image