• ঢাকা
  • রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

সিলেট-১০ নম্বর কূপে তেল উত্তোলনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ ফেরুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০২:০৯ পিএম
সিলেট-১০ নম্বর কূপে তেল উত্তোলনে আধুনিক প্রযুক্তি
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

নিউজ ডেস্ক : জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সিলেটে আবিষ্কার হওয়া নতুন কূপ থেকে বাণিজ্যিকভাবে জ্বালানি তেল উত্তোলনের পথে পা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ। জ্বালানি বিভাগ বলছে, সিলেট-১০ নম্বর কূপটিতে তেলের মজুত জানতে আরও দুমাস সময় লাগবে। ওই এলাকায় কার্যকর তেলক্ষেত্র গড়ে তুলতে প্রয়োজনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

পুরো দেশকে সিলেটের অদূরে অবস্থিত সিলেট-১০ নম্বর কূপটি জ্বালানি মজুতের নতুন তথ্য দিয়ে আশাবাদী করেছে।

প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় মজুতপ্রবণ এলাকাখ্যাত সিলেটের এ অঞ্চল এবার নতুনভাবে তেলক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত হতে যাচ্ছে। সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের অধীনে প্রায় সাড়ে ৮ একর জমিতে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোপ্যাক এ কূপটির খননকাজ শেষ করেছে। যেখানে তিনটি স্তরে প্রাকৃতিক গ্যাস ও একটি স্তরে মিলেছে জ্বালানি তেলের অস্তিত্ব।
 
গত ডিসেম্বরে অনুসন্ধানের প্রাথমিক ফল পাবার পর থেকেই এ কূপটি দেশকে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার নতুন আশা দেখাচ্ছে। কূপটিতে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুত আছে, সেই তেল এখন উত্তোলনের পথে হাঁটছে সরকার। একই সঙ্গে এ জ্বালানি তেল উত্তোলনে যে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির দরকার পড়বে, সেই পথেও অনেকটা এগিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।  

সিলেট-১০ কূপটির প্রায় দেড় হাজার মিটার নিচের স্তরে মিলেছে ক্রুড বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুত। ইনফোগ্রাফিক্স খনি প্রকৌশলীদের দেয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, এ কূপটির প্রায় দেড় হাজার মিটার নিচের স্তরে মিলেছে ক্রুড বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুত। বাকি স্তরগুলোর একেকটিতে মিলেছে প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় আধার। ড্রিল স্টিম টেস্ট বা ডিএসটি চলাকালে কূপটিতে স্বয়ংক্রিয় চাপে ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রাথমিক ধারণা বলছে, এখানে ১৫ থেকে ১৮ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের মজুত থাকতে পারে এবং গ্যাস মিলতে পারে ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত।
 
সম্প্রতি এ কূপটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এখানে পাওয়া অপরিশোধিত তেলের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি জানান, বাণিজ্যিকভাবে এ তেল উত্তোলনে সরকার আরও কিছু পরীক্ষার অপেক্ষায় রয়েছে।

নসরুল হামিদ বিপু বলেন, এখন মূল্যায়ন চলছে। এর পরে জানা যাবে এখানে কী পরিমাণে তেল পাওয়া যাবে এবং কী পরিমাণে তেলের মজুত আছে। আমরা এরই মধ্যে একটি ড্রিল করেছি। এখন আমরা আরেকটি ড্রিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখানের তেল পাওয়ার বিষয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। কেউ বলছেন, ১১ মিলিয়ন ব্যারেল, আবার কেউ বলছেন ১৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পাওয়া যাবে। কাজেই আমরা বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যায় যেতে চাই। তেলের ক্ষেত্রে এটিই হবে বাংলাদেশের বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর একটি প্রকল্প।  

মজুতের সঠিক তথ্য এবং প্রয়োজনীয় সক্ষমতা আছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, দরকার হলে সরকার উচ্চতর প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেবে। 
 
তিনি বলেন, আমরা এখানে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। শেভরনের কূপ খননে আমরা দেখেছি যে তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে। সুতরাং, এই বিষয়টি আসায় আমাদের এখানে সম্ভাবনার ক্ষেত্রটি ত্বরান্বিত হয়েছে। আমরা সবকিছু নিয়ে ভালো সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।
  
এমন সম্ভাবনার মধ্যেও জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মত হলো, একটি বা দুটি নয়, বরং ওই অঞ্চলে বেশকিছু কূপে একযোগে খনন কার্যক্রম চালালে দ্রুত সুফল মিলবে।
 
এমন পরামর্শ দিয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বদরূল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে যে সমস্ত ভূতাত্ত্বিক তথ্য রয়েছে, তাতে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে একটি গ্যাসপ্রবণ দেশ। বাংলাদেশে তেলের স্তর সীমিত ও ছোট আকারে আরও অনেক পাওয়া যাবে। তবে তেলক্ষেত্র খনন করার যে প্রক্রিয়া আমাদের দেশে ব্যবহার হচ্ছে, সেটি আন্তর্জাতিক মানের নয়। এটি আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। আমরা যদি তেল পাই, তাহলে তেল ক্ষেত্রে উন্নয়নের যে প্রক্রিয়া রয়েছে, একাধিক কূপের মাধ্যমে যে উৎপাদনে নিয়ে আসা, এ ক্ষেত্রে আগে কাজ করতে হবে।’
 
এখানে অচিরেই আরও দুটি কূপ খনন করবে জ্বালানি বিভাগ। এর একটি তেল এবং অন্যটি গ্যাস কূপ হতে যাচ্ছে। তেল ও গ্যাসের মোট হিসেবে অন্তত ১৮ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার উত্তোলনযোগ্য সম্পদ রয়েছে সিলেটের এ মাটিতে। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image