নিউজ ডেস্ক : সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ জনতার রায়ে পিছিয়ে থাকলেও সরকার গঠনে এগিয়ে গেলেন। স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা নওয়াজ শরিফ যে এবার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন তা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। কারণ তার মাথায় সামরিক বাহিনীর হাত আছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় তাকে প্রধানমন্ত্রী পদও ভাগাভাগি করতে হচ্ছে বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে।
জিও টিভি জানিয়েছে, তিন বছর প্রধানমন্ত্রী হবে নওয়াজ শরিফ এবং বাকি দুই বছর দায়িত্ব পালন করবেন বিলাওয়াল ভুট্টো। যদিও দুই দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে ভাগাভাগি: পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের পর সরকার গঠন নিয়ে বিভিন্ন দলের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। নানা সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার পর এবার ক্ষমতা ভাগাভাগির আওতায় পালাক্রমে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনা ভেবে দেখছে নওয়াজ শরিফের পিএমএল ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি। সংবিধান অনুসারে, নির্বাচনি দিনের পর থেকে তিন সপ্তাহ বা ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকার গঠন করতে হবে। স্বতন্ত্রদের পর নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও তৃতীয় স্থান পাওয়া পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সরকার গঠনে পরস্পরকে সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। তবে সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী কে হবে তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
দুই দল সরকার গঠনের দিকে গেলেও এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকার গঠন করতে পারছে না। স্বতন্ত্ররা একটি দলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে দলটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর আলি জানিয়েছেন, তারা পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এন) কিংবা পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) কারো সঙ্গেই জোট করবেন না। এর চেয়ে তারা পার্লামেন্টে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকাকেই শ্রেয় মনে করেন।
নিজ নিজ দল থেকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি জানাচ্ছে দুই দলই। সেক্ষেত্রে এই সমস্যা সমাধানে ক্ষমতা ভাগাভাগির আওতায় পালাক্রমে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। পাকিস্তানের জিও টিভি জানিয়েছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর ক্ষমতা ভাগাভাগির ফর্মুলা নিয়ে রবিবার বৈঠক করেছে দুই দল। গতকালও দল দুটির মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এ ফর্মুলার আওতায় কেন্দ্র ও প্রদেশে জোট সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদের তিন বছরের জন্য পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন এবং বাকি অর্ধেক সময়ের জন্য পিপিপি তাদের দল থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবে-এমন সম্ভাবনা নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। জানা গেছে, নওয়াজের দল পিপিপি প্রেসিডেন্টকে সিনেট চেয়ারম্যান ও জাতীয় পরিষদের স্পিকার হওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে।
রবিবার লাহোরের বিলাওয়াল হাউজে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুপক্ষই জোট সরকার গঠনের ওপর জোর দিয়েছে। এর ব্যতিক্রম হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত স্বতন্ত্ররা ক্ষমতায় চলে আসতে পারে বলে তাদের মধ্যে আশঙ্কা কাজ করছে। ইমরান খানের দলকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে এই দুই দল সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইমরান খানের সমর্থনপুষ্ট স্বতন্ত্র এমপিরা সংসদের সংরক্ষিত আসনের ভাগ পেতে কোনো একটি দলে যোগ দিতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: