নিউজ ডেস্ক: সাতক্ষীরায় চিংড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মিঠা পানিতে সাদা মাছের চাষ। আর সাদা মাছ চাষ সম্প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে বাড়ছে ঘেরের আইলে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ। চলতি বছর জেলায় ৮৭৫ হেক্টর জমির আইলে সবজি চাষ হয়েছে। ঘেরের আইলে সবজি আর নিচে পানিতে মাছ। ক্রমেই বাড়ছে এই চাষ পদ্ধতি। ফলে জেলায় সমন্বিত সবজি চাষে সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ী) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ৮৭৫ হেক্টর জমির (মাছের ঘেরের বেড়ি) আইলে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ হয়েছে। বেশি সবজির চাষ হয়েছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় আর সবচেয়ে কম চাষ হয়েছে দেবহাটা উপজেলার মাছের ঘেরের আইলে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ৩৪০ হেক্টর জমির আইলে সবজি চাষ হয়েছে, তালায় ১৬৫ হেক্টর, কলারোয়ার ৫৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ৮০ হেক্টর, কালীগঞ্জে ১৩৫ হেক্টর, দেবহাটায় ২০ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলার ৮০ হেক্টর জমির আইলে সবজি চাষ হয়েছে। জেলার মোট চাষকৃত মাছের ঘেরের জমির আইলে হেক্টরপ্রতি গড় ১৯ মেট্রিকটন হারে মোট ১৬ হাজার ৬২৫ টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অধিকাংশ মাছের ঘেরে যতদূর চোখ যায় সবুজের হাতছানি। ঘেরের আইলে ও ঘেরের আইলের ওপরে নির্মিত সারি সারি মাচায় ঝুলছে করলা, লাউ, কুমড়া, বরবটি, চিচিঙ্গা, ধুন্দল আর শসা। আইলের ওপরে রয়েছে ঢ্যাঁড়শ, পুঁইশাক ও কলাগাছ। বর্ষাকালীন সবজির পাশাপাশি আগাম শীতকালীন সবজি চাষও শুরু করেছেন অনেকে।
নগরঘাটা ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের ইসরাইল হোসেন জানান, তিনি ১৬ একর জমিতে মাছের ঘের করেছেন। তার তিন পাশে সবজি চাষ করেছেন। তার ১৬ একর জমির তিন পাশের সবজি চাষে সবমিলে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। যেখান থেকে সবজি পাওয়ার সময় চলে এসেছে কম বেশি।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক নুরুল হুদা জানান, বর্তমানে জেলার অধিকাংশ ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ হচ্ছে। ঘের পাড়ে উৎপাদিত লাউ, উচ্ছে, শসা ও বরবটি আরো আগে থেকে জেলার বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে। কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, বিগত কয়েক বছরে মাছের ঘেরের আইলে সবজি চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে সাতক্ষীরায়। আর পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় অতীতের তুলনায় ভবিষ্যতে আরো কৃষিবিপ্লব ঘটবে এ অঞ্চলে।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: