খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়িতে কফিচাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন পাহাড়ের চাষিরা। পাহাড়ের মাটি, ও আবহাওয়া কফি চাষের অনুকূলে হওয়ায় চাষিরা ঝুঁকছেন এ কফি চাষের দিকে। ভবিষ্যতে পাহাড়ে উৎপাদিত কফি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ববাজারে স্থান করে নেবে এমনটাই আশা সংশ্লিষ্টদের।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সড়কের ৮ মাইল নামক এলাকায় গত তিন বছর আগে দুই একর জমিতে ১২শ কফির চারা রোপণ করেছেন যলেশ্বর ত্রিপুরা নামে এক চাষি। যলেশ্বর ত্রিপুরা বলেন, ‘এরাবিকা’ও ‘রোবাস্টা’ জাতের কফির চারা রোপণ করেছি। এ বছর বেশ কয়েকটা গাছে কফি ফল এসেছে। আশা করি আগামী বছর বেশিরভাগ গাছে ফল আসবে।
সাত মাইল এলাকার কফিচাষি গণেশ ত্রিপুরা বলেন, আমি এক একর জমিতে ৫শ কফির চারা রোপণ করেছি। পাহাড়ের পাদদেশে রোপণ করা চারার অবস্থা ভালো। কিন্তু ঢালু অংশের চারা পানির অভাবে মারা গেছে। কিছু কিছু গাছে ফলও এসেছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির সঙ্কট নিরসনে কৃষি বিভাগের সহযোগিতা চান তিনি।
পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাহাড়ি অঞ্চলে কফি চাষের উপযোগিতা পরীক্ষাসহ কৃষকদের কফি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে পৃথক প্রকল্প কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ।
খাগড়াছড়িতে কফি চাষ করে প্রথম সফলতা পায় পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। ২০০১ সালে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে কফির চাষাবাদ শুরু হয়। বর্তমানে এই কেন্দ্রের প্রায় সাড়ে ৪শ গাছের শাখায় ঝুলছে লালচে রঙিন কফি ফল। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে চারা রোপণের ৪-৫ বছর পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে চাষকৃত ‘এরাবিয়ান’ জাতের কফি অত্যন্ত সুস্বাদু, ঘ্রাণযুক্ত এবং বাজারের কফির তুলনায় অধিক গুণগত মানসম্পন্ন।
মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জমি কফি চাষের উপযোগী। কেন্দ্রের ভেতরে লাগানো গাছগুলোতে কফির ভালো ফলন হয়েছে। আমরা ৩০টা পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী প্লটে অন্তত ১৫ হাজার চারা বিতরণ করেছি। এছাড়া বাগানের আগাছা পরিষ্কার করার জন্য এককালীন ৩ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি।
উপপরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, কফি উৎপাদন শেষে এর প্রক্রিয়াজাত ও বিপণন নিয়ে কোনো সঙ্কট হবে না। খাগড়াছড়ির ৬টি হটিকালচার সেন্টারে কফি প্রক্রিয়াজাতকরণের মেশিন আছে। কৃষকরা সেখানে তাদের কফি প্রক্রিয়াজাত করতে পারবেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: