• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার মানন্নোয়নসহ ১৬ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:০২ পিএম
কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার মানন্নোয়নসহ
১৬ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

জহিরুল ইসলাম সানি : কওমি মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষকদের মানন্নোয়নের স্বার্থে ১৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকার, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, প্রশাসন, সুশীল সমাজ, শিক্ষাবিদদের প্রতি দাবি কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকালে রাজধানী সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

এ সময় দাবি উত্থাপন করেন, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান চৌধুরী, পীর সাহেব দেওয়ান।

দাবিগুলো নিম্নে দেওয়া হল :  সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত দ্বীনি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। একইসঙ্গে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কারী সাহেবদের মাধ্যমে সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন মাজিদ তেলাওয়াত শেখানো এবং বুনিয়াদি ইসলামি শিক্ষার ব্যবস্থা করা; দ্বীনি শিক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক সকল আইন ও বিধি-বিধান বাতিল বা সংশোধন করা; কওমি মানরাসার স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্রতা বজায় রাখা; মাদরাসা-মসজিদ দাতব্য প্রতিষ্ঠানসমূহে দাতাদের দান সম্পূর্ণভাবে আয়করমুক্ত রাখার পূর্ববৎ আইন চালু অথবা নতুন বিধি-বিধান প্রণয়ন ও কার্যকর করা; মাদরাসা শিক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনস্তাত্ত্বিক চাপ। কোনো কোনো মহল অনৈতিকভাবে প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে আলেমদের নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করে আসছে, সেসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।

এ কথা বারবার প্রমাণিত হয়েছে, জঙ্গি আক্রমণ ও জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে কলমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই জড়িত নন। তারপরও দ্বীনি শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। এগুলো বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে জাতিকে রক্ষা করা; ভারতের সঙ্গে আমাদের শিক্ষা-সাংস্কৃতিক সকল বিষয়ের চুক্তি বিরজমান থাকা সত্ত্বেও দ্বীনি শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার শিক্ষা ভিসা প্রদান করা হয় না। এমতাবস্থায় উচ্চতর দ্বীনি শিক্ষার প্রয়োজনে ভারতে যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা উন্মুক্ত সহজতর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা; শিক্ষা কমিশন এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (N.C.T.B) এক তৃতীয়াংশ সদস্য হিসেবে আলেমদের সম্পৃক্ত রাখা। সেই সঙ্গে শিক্ষানীতি প্রণয়নকারী শিক্ষা কমিশনে অভিজ্ঞ গ্রহণযোগ্য কওমি আলেমদের সম্পৃক্ততা খুবই জরুরি, যাদের সংখ্যা কমিশনের মোট সদস্য সংখ্যার এক তৃতীয়াংশ। একই সাথে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে কওমি উলামায়ে কেরামের সম্পৃক্ততা থাকা জরুরি; নৈতিক অবক্ষয়রোধে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা বন্ধে প্রয়োজনীয় কার্যকরী আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা। সেই সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে জনসাধারণের মাঝে ধর্মীয় মূলবোধের চেতনা জাগিয়ে তোলা; কওমি শিক্ষাকে বিশেষায়িত শিক্ষা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান এবং আধুনিকায়নের নামে মাদরাসা শিক্ষা সংকোচনের যাবতীয় ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ
করা; ২০১৮ সালে প্রণীত আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতুল কওমিয়ার অধীনে কওমি মাদরাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) জামাতের সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রীর সমমান প্রদান করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক স্তর অর্থাৎ মক্তব, নাজেরা, হেফজ বিভাগ, কিতাব বিভাগেরইবতেদায়ী (প্রথম শ্রেণি) থেকে ধারাবাহিক মিশকাত জামাত পর্যন্ত শ্রেণিসমূহ অন্যকোনো নীতি বা আইন দ্বারা যাতে বাধাগ্রস্থ না হয়, তা উল্লিখিত আইনে সুস্পষ্ট করা; মুসলিম জনসাধারণের মধ্যে কোরআন ও নামাজ শুমারী করে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মসজিদভিত্তিক ও মক্তব-মাদরাসা, বয়স্ক পুরুষ, মহিলা ও শিশু-কিশোরদের কোরআন শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং নামাজি বানানোর জন্য দাওয়াতি মেহনত চালু করা; ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ এবং মাদকের আগ্রাসন থেকে জাতিকে সচেতন ও সংগঠিত করার লক্ষ্যে হক্কানি বুজুর্গ আলেমদের মাধ্যমে ওয়াজ- নসিহতের সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা দূর করা; জাতি গঠনে সবধরনের উগ্রতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কওমি উলামায়ে কেরাম কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন। এটাকে সরকার প্রধানসহ দেশবাসী স্বতস্ফূর্তভাবে স্বীকার করা সত্ত্বেও প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা একশ্রেণির অতি উৎসাহী ইসলাম বিদ্বেষী চক্র কওমি মাদরাসাসমূহে নতুনভাবে চিঠি পাঠিয়ে মাদরাসার আয়-ব্যয়, কমিটির সদস্য ও দাতারে পরিচয়সহ নানা তথ্য চাওয়া হচ্ছে। এভাবে ভীতিকরনপরিবেশ সৃষ্টি করে প্রকারান্তরে দ্বীনি শিক্ষাকে বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে। তাদের এমন আচরণ অতিদ্রুত বন্ধ করা; যেহেতু মুসলিম জনগণের অর্থায়নে কওমি মাদরাসাসমূহ পরিচালিত হয় এবংমাদরাসা গুলোর আয়ের একটি বড় উৎস কোরবানির চামড়া। এমতাবস্থায় কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির বিষয়ে সঠিক কর্মপন্থা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা; মাওলানা মামুনুল হকসহ এ যাবৎ আলেম-উলামাদের নামে দায়েরকৃত সকল প্রকার মামলা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দি আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান করা; বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মুফতি ফয়জুল করীম শাইখে চরমোনাই-এর উপর হামলা করার তীব্র নিন্দা এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আশেকে মোস্তফা, মহাসচিব মাওলানা মুস্তাকিম বিল্লাহ হামিদী, সাংগঠনিক সচিব মাওলানা মেরাজুল হক মাজহারী সহ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image