• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

যেভাবে বার বার জিতে যায় মমতা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ০৫ জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০২:০৯ পিএম
তৃণমূল
তৃণমূল কংগ্রেস

সুমন দত্ত:
  পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফল কেন পরিবর্তন হয় না। কীভাবে তৃণমূল কংগ্রেস বার বার জিতে যায়। এই প্রশ্নটা অনেক বাঙালীর মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেকে বলছেন মমতার মধ্যে কি আছে? পাবলিক কেন তাকে দেখে ভোট দেয়? এবার অনেকে আশা করেছিল পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ভালো করবে। ফলাফলে দেখা গেল গত লোকসভার চেয়ে বিজেপি খারাপ করেছে এ রাজ্যে। গত বারের চেয়ে ৬-৭ আসন কম পেয়েছে দলটি। যা সবাইকে হতাশ করেছে। প্রতিবেশী বাংলাদেশের সনাতনীরাও হতাশ হয়েছে এই ফলাফলে। অন্যদিকে বাংলাদেশের মুসলমানরা খুব খুশি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই সম্প্রদায়ের লোকদের কমেন্ট দেখলেই বোঝা যায় এই চিত্র।

আত্মীয়তা সূত্রে বেশ কয়েকবার পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছি। সেখানকার মানুষদের সঙ্গে কথা বার্তা বলার সুযোগ হয়েছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কলকাতা শহর ঘুরেই পশ্চিমবঙ্গ মূল্যায়ন করেন। খুব কম লোকই আছেন যারা পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম গুলোতে যান। আমার আত্মীয় স্বজনরা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। সে কারণে তাদের সঙ্গে দেখা করতে যেয়ে বেশ কয়েকদিন থাকতে হয়। আর সেখানকার মানুষের সঙ্গে  সাক্ষাৎ হয়। 

রবীন্দ্রনাথের শান্তি নিকেতন এলাকা পড়েছে বীরভূম জেলায়। সেখানকার এক প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসা করলাম এখানে তৃণমূল জেতে কীভাবে? সে বলল যত সন্ত্রাসী ক্রিমিনাল বস্তির পোলাপান তৃণমূল করে। সারা বছরই এরা মারামারি দাঙ্গা হাঙ্গামা করে থাকে। এদের সঙ্গে শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা পেড়ে ওঠে না। ওরা কেউ এ ধরনের আচরণে অভ্যস্ত নয়। ভোটের দিন এদের রাস্তায় দেখলে কেউ ভোট দিতে যায় না। আর এভাবেই জিতে যায় তৃণমূল। 

এবার আসলাম বারাসাতে। সেখানেও একই চিত্র। সেখানকার মুসলিমরা জঙ্গি। যত অবৈধ বাংলাদেশিরা সেখানে ঘাটি গেড়ে বসে আছে। এরা সবাই তৃণমূল কংগ্রেস করে। বিজেপি নন বেঙ্গলিদের মাঝে খুব জনপ্রিয়। তৃণমূল সেখানকার হিন্দুদের ভয় দেখিয়েছে ভোট না দিলে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে। বেশি বেশি চাঁদা দিতে হবে পার্টি অফিসে। অগত্যা সেখানকার ভোট সব পড়ে তৃণমূলে।

পশ্চিমবঙ্গ দীর্ঘদিন ছিল বাম শাসনের অধীনে। তাদের সময় যেসব দুর্নীতিবাজ চোর বাটপার ছিল তারা সবাই যোগ দেয় তৃণমূল কংগ্রেসে। বাংলাদেশে যেমন বিএনপি আমলে সব চোর বাটপার ডিগবাজি মারে। তেমনি সেখানেও এই চিত্র দেখা যায়। এই চোর বাটপাররা আবার প্রশাসনে ডিউটি করে। নির্বাচনী দায়িত্বও পালন করে। যার ফলে তৃণমূলের পক্ষে দুই নম্বরি ভোট দেওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার।

এছাড়া মমতা বুদ্ধি করে ভোটের কয়েক বছর আগে নামিয়ে দিয়েছে বাংলা পক্ষ নামে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে। এই গোষ্ঠীর কাজ হচ্ছে পুরো ভারতের কোথায় কোথায় বাঙালিদের সঙ্গে কেমন আচরণ করছে তা মিডিয়াতে এনে প্রচার করা। তার সমালোচনা করা। এতে বাঙালী অবাঙালী বিভাজন যাতে ভোট পর্যন্ত বজায় থাকে সেই কৌশল করা। তারপর আছে মমতার কিছু আবেগী টোটকা। প্রত্যেক ভোটের আগে তাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবিস্কার। এবার ভোটের আগে হাত পা ভেঙ্গে ব্যান্ডেজ করা ছবি ফলাও করে প্রচার। এসব করে থাকেন। সেই বাম আমল থেকে শুনে আসছি তাকে মাও বাদীরা মেরে ফেলবে।অথচ মাওবাদীদের কোনো অস্তিত্ব পশ্চিমবঙ্গে চোখে পড়ে না। ভারতের ছত্রিশগর রাজ্যে মাওবাদীদের আস্তানা।   

 হিন্দু মুসলিম বিভাজন মমতার রাজনীতির জন্য খারাপ। কিন্তু বাঙালী অবাঙালী বিভাজন তার রাজনীতির জন্য ভাল। এটাই মমতাকে বার বার এগিয়ে রাখছে সবদিক থেকে। আবার এই অভিযোগ যখন মমতার বিরুদ্ধে উঠছে তখন তিনি বাহির থেকে ভিআইপি লোক এনে তাকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। 

অনেকে ভেবেছিল এবার শেখ শাহজাহান কাণ্ডে বসিরহাটের আসন হারাবে তৃণমূল কংগ্রেস। বরং দেখা গেল বসিরহাটে বিপুল ভোটে জিতল তৃণমূল। এই হচ্ছে অবস্থা। সন্দেশ খালির স্পর্শ ভোটারদের মধ্যে নেই। বাংলাদেশের সাতক্ষীরা লাগোয়া এই বসিরহাটে বিপুল সংখ্যক মুসলিমদের বাস। শেখ শাহজাহান সেখানকার হিন্দুদের উচ্ছেদ করে মুসলিমদের পুনর্বাসন করেছেন। হিন্দু মা বোনদের ডেকে নিয়ে পার্টি অফিসে ধর্ষণ করতেন। তিনি এখন এসব অভিযোগে জেলে আছেন। হয়ত কিছুদিন পর জামিনে বেরিয়ে আসবেন। মমতার পাশে বসে সংবাদ সম্মেলন করবেন। নিজেকে নির্দোষ দাবি করবেন। আর যারা তার বিরুদ্ধে ভোটের আগে অভিযোগ করেছিল তারা হবেন গ্রাম ছাড়া। এই হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / এসডি

আরো পড়ুন

banner image
banner image