জহিরুল ইসলাম সানি : মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে এ বছরে দেশে ৭১১জনের মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।নিহত হয়েছে। এসব ব্যাক্তির মধ্যে অজ্ঞাতনামা লাশ ও কারা হেফাজতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর মধ্যে নির্বাচন ও রাজনৈতিক সহিংসতা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড,মুখোশ পরা গুপ্তহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, গার্মেন্টস শ্রমিক দমন-পীড়নের ঘটনা রয়েছে। প্রায় সূচকে গত বছরের ছেয়ে ২০২৩সালে এমন ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও সংখ্যালঘু নির্যাতন কমেছে।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) আয়োজিত বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৩: এমএসএফ'র পর্যবেক্ষণ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে এমএসএফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট সাঈদুর রহমান প্রতিবেদন উপস্থাপন করে জানান, ২০২৩ সালের নির্বাচনী সহিংসতার ১৩৮টি ঘটনায় ১০ ব্যাক্তি নিহত হয়েছে।এসব ঘটনায় ৬৫১ জন আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়েছে ৮ জন। রাজনৈতিক সহিংসতার ৪০০টি ঘটনায় নিহত হন ৪২ জন ও আহত হন ৪৭৭১ জন এবং গুলিবিদ্ধ হন ১৮৬ জন। মুখোশ পরে গুপ্ত হামলায় আহত হয়েছে ১৭ জন ও নিহত হন ৩ ব্যাক্তি। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে বন্দুক যুদ্ধের ১৫টি ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ১৭ ও কারা হেফাজতে ১৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্বারা ৮৯জনকে অপহরণ ও নিখোঁজের অভিযোগ উঠেছে। পোশাক শ্রমিক দমন-পীড়নে ৪১টি মামলা হয়। এতে আসামি ১৬৫০০ জন। এদের মধ্যে ১২১ জন গ্ৰেপ্তার হন। আহত হন ১০৫ জন ও নিহত হন ৪ জন। সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশ করতে যেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত হন ১ জন, আক্রমণের শিকার হয়ে আহত হন ১৫২ জন। হুমকি ও হয়রানির শিকার হন ১৬০ জন। এসময় অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে ৩৫২ জনের। ডিজিটাল/সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা ৬২টি মামলায় ৬৩ জন গ্ৰেফতার হয়েছেন। সীমান্ত পরিস্থিতি মোকাবেলার ঘটনায় নিহত ২৭ ও আহত ৩২ জন। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় ৬৩ জন। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৯৯জন। এদের মধ্যে ৫২৫ জন শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক ৩৭৪ জন। ২২৩ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার ২৭৯জন।এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে ১২ জনকে। নবজাতক উদ্ধার ৯১ জন ও ধর্ষণ সংক্রান্ত সালিশ হয়েছে ২৮টি হয়েছে। ওই বছল গণপিটুনিতে ৮৬ জন নিহত হয়েছেন।
এসময় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সুলতানা কামাল বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় রাষ্ট্র যে খুব বেশি মনোযোগী হয়েছে, এ কথা আমরা বলতে পারি না। যখন আমরা মানবাধিকারের কথা বলছি সরকার অনেক বেশি আত্মরক্ষা মূলক ও আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলেছে। যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেছে, তাদেরকে একটি বৈরিতায় জায়গায় নিয়ে গেছে। রাষ্ট্র মানবাধিকার সুরক্ষার কোনো দায়দায়িত্বে নাই। বরং মনে হয়েছে মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের বিরক্ত করেছি। তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ কখনো গ্রহণ করেনি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সরকারের উদাসীনতায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস
আপনার মতামত লিখুন: